কানকুন: একদল পরিবেশবিজ্ঞানী আগামী ২০৬০ সালের পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। তারা জানান, সোমবার মেক্সিকোয় শুরু হওয়া জলবায়ু সম্মেলনে তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে বেঁধে রাখার যে সীমা নির্ধারণ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে তা অসম্ভব।
ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক কেভিন অ্যান্ডারসন ও অ্যালিস বাউস রয়্যাল সোসাইটির একটি জার্নালে বলেন, ‘ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে বেঁধে রাখা এখন আর কোনো সম্ভাবনা নেই। ’
নতুন এই বিশ্লেষণে অ্যান্ডারসন ও বাউস কোপেনহাগেন চুক্তিতে স্বার করা দেশগুলোকে সামনে নিয়ে এসেছেন। বিজ্ঞানীদের এই মডেল নিঃসরণের প্রকৃত পরিমাণেও ওপর ভিত্তি করে, নিসঃসণে হ্রাসের হার দিয়ে অনসৃত হয়নি। এতে ধনী ও দ্রুত শিল্পায়িত দেশ যেমন চীনের ক্ষেত্রে নিঃসরণের মাত্রা পৃথকভাবে বিবেচনা করা হয়েছে। তারা বলেন, ‘২০১০ সাল রাজনৈতিক সমঝোতার বছর। এই গবেষণাপত্রে অন্তসারশূন্য কোনো বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়নি, বরং একটি উন্মুক্ত ও গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়ন করা হয়েছে, যেখানে আমাদের ইচ্ছার গোলাপ রঙ পেয়েছে। সত্যিকার আশা ও সুযোগকে যদি আদৌ বিকাশের রাস্তা দেওয়া হয়, বিশ্ব সম্প্রদায় যে মাত্রায় সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তা মোকাবিলায় খসড়া ও পপাতহীন মূল্যায়ন থেকে সেই রাস্তা পরিষ্কার হবে। ’
ইংল্যান্ডের ইস্ট অ্যাঙলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিকিা র্যাচেল ওয়ারেন তার গবেষণাপত্রে বলেন, ‘বিস্তৃত অঞ্চল খরা ও মরুভূমিতে পরিণত হবে। পরিবেশ-শৃঙ্খলায় নতুন এলাকায় শস্য উৎপাদনের প্রয়োজন বেড়ে যাবে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার বৃদ্ধির জন্যও বৃহৎ পরিসরে অভিযোজন জরুরি হয়ে পড়বে। মানব ও প্রাকৃতিক ব্যবস্থাদিও কীটপতঙ্গ ও রোগবালাইয়ের কাছে পরাজিত হবে। চূড়ান্ত ও তীব্র জলবায়ুসংক্রান্ত দুর্ঘটনার হার বেড়ে যাবে। ’
ওয়ারেন আরও বলেন, ‘এই পৃথিবীটাও দ্রুত তার পরিবেশ-শৃঙ্খলা হারাবে। জীববৈচিত্র্য, বনজঙ্গল, উপকূলীয় জলাভূমি, ম্যানগ্রোভ বন বিষাক্ত ও অকার্যকর হয়ে যাবে। এরকম ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের দুনিয়ায় মানব অভিযোজনের সীমা সবস্থানেই ছাড়িয়ে যাবে। ’
অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, আমরা কী পরিমাণ নিঃসরণ করছি কেবল সেটাই নয়, বরং আমরা কত দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে রানা রায়হান।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১০