ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় চাই টেকসই কৌশল’

ডেস্ক রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০
‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় চাই টেকসই কৌশল’

কানকুন, মেক্সিকো: ‘জলবায়ু পরিবর্তন এই ধরিত্রিতে মানবজাতির টিকে থাকার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে’। জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।



তারা বলছেন, এ সমস্যা মোকাবেলায় এখনই প্রয়োজন টেকসই কর্মকৌশল প্রণয়ন।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় যুৎসই কৌশল গ্রহণে ২৯ নভেম্বর থেকে মেক্সিকোর কানকুনে শুরু হওয়া এ সম্মেলনে প্রায় ২০০টি দেশের ২৫০০০ অংশগ্রহণকারী অংশ নিয়েছেন।

বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিনিধি ছাড়াও ব্যবসায়ী, বেসরকারি উদ্যোক্তা ও গবেষণা সংস্থার প্রতিনিধিদের সরব উপস্থিতিতে পুরো কানকুনেই যেন উৎসবের আমেজ। সবার আশা কোপ-১৫ এর মতো যেন ব্যর্থ না হয় এই কোপ-১৬।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ফিলিপে কালদেরন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবেলায় এই ধরিত্রীর মানুষ দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে এমন ফলই এ সম্মেলন থেকে আশা করা হচ্ছে।

‘এ সম্মেলনের প্রতিটি বিষয়য়ের সঙ্গেই আমাদের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ধরিত্রীতে যে দুর্যোগ দেখা দিয়েছে তা মানুষের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে’, বলেন তিনি।

ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে বেশ কিছু চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছা সম্ভব হলেও চুক্তিতে কোনো ধরনের আইনি বাধ্যবাধকতার উল্লেখ ছিল না।  

ক্যালদেরনের মতে, কানকুন সম্মেলনে এ বিষয়ে অনেকটা অগ্রগতি হবে।

তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্ববাসী একটি সংকটপূর্ণ মুহূর্তে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণ খুবই ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রকৃতি ও মানুষের মাঝে যে দুরত্ব তা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কি করা যায় সে ব্যাপারে সম্মেলনে আলোচনা প্রয়োজন। পাশাপাশি আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নত ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যের ফারাকও কমিয়ে আনতে কৌশল তৈরি করতে হবে। ’

নোবেলজয়ী মারিও  মোলিনা বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বিশ্ব জলবায়ুতে নাটকীয় পরিবর্তন এনেছে। আমাজান বৃষ্টি-অরণ্যের এমশ সংকুচিত হয়ে যাওয়া কিংবা ভারতীয় অঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টিপাতে বিশৃঙ্খল অবস্থার জন্য এই পরিবর্তন দায়ী।

মারিও মোলিনা ১৯৯৫ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, কানকুন সম্মেলনেও আইনি বাধ্যবাধকতা রেখে  চুক্তিতে পৌঁছা খুবই কষ্টসাধ্য হবে। তবে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বন রক্ষাসহ বেশ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি আসবে এমনটিই আশা করছেন তারা। আর এটি সম্ভব হলে দক্ষিণ আফ্রিকায় পরের বছর অনুষ্ঠেয় সম্মেলনের জন্য একটি মজবুত ভিত্তি তৈরি হবে।

এদিকে, চীনের জলবায়ু পরিবর্তন অধিদপ্তরের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্মস কমিশনের প্রধান সু ওয়েই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কানকুন সম্মেলনে চীন ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় অগ্রগতি করতে কানকুন সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘ সনদ, কিওটো প্রটোকল ও বালি রোডম্যাপের সঙ্গে আমরা সবসমই আছি এবং থাকবো। ’

‘কোপেনহেগেন সম্মেলনে যেমন একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছা সম্ভব হয়েছিল তেমনি এখানেও আশা করছি সব বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।