ঢাকা, রবিবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

মমতার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতি!

কলকাতা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:১২, এপ্রিল ২৯, ২০১৩
মমতার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতি!

কলকাতা : পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতি হিসেবে চিহ্নিত করছেন বিভিন্নমহল থেকে। প্রশ্ন উঠেছে তিনি কী দলের মধ্যেকার ত্রুটিপূর্ণ মস্তিষ্ক বা বামফ্রন্ট শক্তিগুলির দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন?

কেউ কেউ বলছেন তবে কী তিনি তাঁর রাজনৈতিক বিচক্ষণতা হারিয়ে ফেলেছেন? প্রতারিত বিনিয়োগকারীদের জন্য তাঁর পাঁচশো কোটি টাকার তহবিল গড়ার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেই এইসব প্রশ্ন উঠে আসছে।



তবে ব্যাপার হল- এই তহবিলের খানিকটা অংশ তোলার জন্য সিগারেটের ওপর অতিরিক্ত দশ শতাংশ কর বসানো হয়েছে। আর বাকি অংশ কোথা থেকে আসবে তা এখনই তিনি খোলসা করে কিছু বলেননি।

তাঁর মৃত্যু অভীপ্সার খানিকটা স্বীকৃতি মেলে যখন তিনি ধূমপায়ীদের আরও বেশি করে সিগারেট খাওয়ার পরামর্শ দেন, যাতে সারদা গোষ্ঠীর প্রতারণার যারা শিকার হয়েছেন এবং শীঘ্রই মুখোশ খুলে গেলে আরও এই ধরনের সংস্থার প্রতারণার যারা শিকার হবেন তাদের উদ্ধার করার জন্য এই অর্থ ব্যবহার করার প্রতিশ্রুতিতে।
    
এই কাজ করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নিজের সঙ্গে একাধিক শ্রেণির মানুষের দূরত্ব কিন্তু বাড়িয়ে দিলেন।

তাঁর এই সিদ্ধান্তে খুশি হওয়ার কথা নয়- (ক) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিরাট সংখ্যক ধূমপায়ীদের, (খ) তাঁরাও খুশি হবেন না যারা মনে করেন আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত এই সরকারের উচিত খরচ কমানো ও কঠোর আর্থিক নিয়ম মেনে চলা, (গ) সারদার বিশাল সংখ্যক বিনিয়োগকারীও কিন্তু খুশি হতে পারবেন না, যাঁরা পরে দেখবেন) মুখ্যমন্ত্রীর ৫০০ কোটি টাকার তহবিল থেকে তাঁরা কিছুই পাননি অথবা পেলেও তা খুবই নগণ্য, (ঘ) সেই মানুষেরাও খুশি হতে পারবেন না যাঁরা মনে করেন নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা সরকারের কর্তব্য ও দায়িত্ব এবং (ঙ) অখুশি মানুষের তালিকায় তাঁরাও থাকবেন যাঁরা এতদিন চিটফান্ডগুলির সঙ্গে যোগসাজশের প্রশ্নে এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে রেখেছিলেন।

অনেকের মতে- সিগারেটের উপর নতুন কর চাপিয়ে চিটফান্ডের বিনিয়োগকারীদের তথাকথিত সাহায্যের সিদ্ধান্তে মুখ্যমন্ত্রী প্রকারান্তরে চিটফান্ডগুলির বেআইনি ব্যবসার সঙ্গে আশপাশের লোকদের যোগসাজশটা প্রমাণ করলেন।

নচেৎ কেন তিনি চিটফান্ডের প্রতারণার শিকার যারা তাদের এবং এই ব্যবসার যারা পৃষ্ঠপোষক তাঁর দলের সেই লোকেদের বাঁচাতে তিনি কেন এত ব্যগ্র হয়ে উঠলেন ?
    
সারদা কেলেঙ্কারির পশ্চাতে ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রান্ত সংবাদমাধ্যম নীতি। বিগত দুবছরে তাঁকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে গেছে সংবাদ মাধ্যমের কিছু শঠ ও ধূর্ত কর্তাব্যক্তি। তাঁদের প্রতিটি প্রতারণামূলক কাজে অনুমোদন দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কয়েকজনকে সদস্য করে রাজ্যসভায়ও পাঠিয়েছেন।

যিনি এখন খলনায়কের পরিণত সেই সুদীপ্ত সেনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে সেই প্রবঞ্চকরাই যারা বামফ্রন্ট আমলে বামনেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে এবং ক্ষমতার পালাবদলের পর মমতার খুব কাছে চলে এসেছিল।

বলা হচ্ছে- মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন। তাহলে বলতেই হয়- তিনি স্বেচ্ছায় প্রতারিত হয়েছেন। দুঃখজনক সত্য হল যে, মুখ্যমন্ত্রী কিছু চাটুকার ও ধূর্ত মানুষের দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময় : ১২৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৩
সম্পাদনা: এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।