ঢাকা: আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) অর্থ নিয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তা জোরদারের জন্য এ অর্থ প্রয়োজন ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা একটি প্রতিবেদনে জানায়, প্রায় এক দশক ধরে কারজাইয়ের কার্যালয়ে প্রতি মাসে স্যুটকেস, ব্যাকপ্যাক বা প্লাস্টিকের শপিং ব্যাগভর্তি ডলার যেত। আফগান সরকারের ওপর নিজেদের প্রভাব বজায় রাখতেই সিআইএ এসব অর্থ পাঠাত। এসব ব্যাগভর্তি ডলার গোপনে আসত, গোপনে বের হতো কার্যালয় থেকে।
কারজাইয়ের বর্তমান ও সাবেক উপদেষ্টাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় পত্রিকাটি। সিআইএ এ নিয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলেও কারজাই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন ।
সোমবার ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কারজাই বলেন, “হ্যাঁ, জাতীয় নিরাপত্তা কার্যালয় গত ১০ বছর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়েছে...প্রতি মাসে। অর্থের পরিমাণ বেশি নয়। স্বল্প অর্থ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হতো। ”
ওই অর্থ অসুস্থ, আহতদের সহায়তা ও ‘অভিযান’ সংক্রান্ত উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হতো বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি, কারজাই ব্যক্তিগতভাবে ওই অর্থ নিয়েছিলেন কিনা। আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই অর্থ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদই তদারকি করত।
নিউইয়র্ক টাইসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আফগানিস্তান সরকারকে সিআইএ’র অর্থ দেওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। ২০০১ সালে আগ্রাসনের সময় সিআইএ বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ কাশিম ফাহিমসহ অনেক যুদ্ধবাজ নেতাদের অর্থ দিত যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, তালেবানকে উৎখাত করার জন্য অর্থ দেওয়া হত। কারজাইয়ের সৎভাই আহমেদ ওয়ালি কারজাইকে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য কান্দাহার স্ট্রাইক ফোর্স গ্রুপ পরিচালনা করতে সিআইএ অর্থ দিত। ২০১১ সালে আততায়ীর হাতে নিহত হন ওয়ালি কারজাই।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের আইন মেনেই সিআইএ কারজাই সরকারকে অর্থ দিত তবুও মার্কিন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে নাখোশ ছিল।
অনেক মার্কিন কর্মকর্তাদের অভিযোগ, এভাবে অর্থ দেওয়ার কারণে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে, যুদ্ধবাজদের শক্তিশালী করেছে এবং আফগানিস্তানে ওয়াশিংটনের কৌশলের ভিতকে নড়বড়ে করে দিয়েছে।
এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, “আফগানিস্তানে দুর্নীতির সবচেয়ে বড় উৎস ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com