ঢাকা, রবিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

চলেই যেতে হল সরবজিৎকে

কলকাতা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:০০, মে ২, ২০১৩
চলেই যেতে হল সরবজিৎকে

কলকাতা : গত ছ‘দিনের লড়াই শেষ। নৃশংসতার কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন সরবজিৎ সিং।

বাংলাদেশ সময় রাত দু’টো নাগাদ পাকিস্তানের লাহোরের জিন্না হাসপাতালে মৃত্যু হয় সরবজিৎ সিংয়ের। তাঁর দেহ জিন্না হাসপাতালের মর্গে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

ময়নাতদন্তের জন্য তৈরি হয়েছে বিশেষ মেডিক্যাল টিম। সরবজিৎ সিংয়ের দেহ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তাঁর পরিবার। সরবজিৎকে শহীদের স্বীকৃতি দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে তাঁর পরিবার। একইসঙ্গে তাঁদের দাবি, পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সরবজিৎ সিংয়ের শেষকৃত্য হোক।

উনিশশো নব্বই সাল থেকে পাকিস্তানের জেলে বন্দি ছিলেন সরবজিৎ সিং। তাঁর বিরুদ্ধে লাহোর ও মুলতানে বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ অভিযোগে সরবজিৎকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেয় পাকিস্তান আদালত। এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেয় সেদেশের সুপ্রিম কোর্টও।

সরবজিতের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেন সাবেক পাক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ। এরপর পাকিস্তান পিপলস পার্টি নেতৃত্বাধীন পাক সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য সরবজিতের প্রাণদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেয়। এই পরিস্থিতিতেই গত শুক্রবার লাহোরের কোর্ট লাখপত জেলে সরবজিতের ওপর হামলা চায়ায় ছয় পাকিস্তান বন্দি।
    
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তাঁর বার্তায় সরবজিতকে দেশের এক সাহসী সন্তান হিসেবে বর্ণনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরবজিত সিংয়ের মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে শোকাহত। সরবজিত প্রচণ্ড সাহসের সঙ্গে সমস্ত দুঃখকষ্ট মোকাবিলা করেছেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন।

একইসঙ্গে পাকিস্তানের নিন্দা করেছেন মনমোহন সিং। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিষয়টি মানবিকতার সঙ্গে দেখার জন্য ভারত সরকার, সরবজিতের পরিবার ও দুদেশের নাগরিক সমাজের তরফে বারংবার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।

কিন্তু, পাকিস্তান সরকার সবই অগ্রাহ্য করেছে। সরবজিতের হত্যাকারীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। সরবজিতের দেহ তাঁর পরিবারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং টুইটারে লিখেছেন, সর্বজিতের আবেদন মানবিকাতার নজরে দেখেনি পাকিস্তান, যা অত্যন্ত দুঃখজনক৷

জম্মু থেকে দিল্লি। লাহোরের জিন্নাহ হাসপাতালে সরবজিৎ সিংয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ।   জায়গায় জায়গায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে  ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের সাধারণ মানুষ।  

বিক্ষোভের নিশানায় পাকিস্তান সরকারও। জম্মুতে দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ সামিল হয়েছেন বিক্ষোভে। অমৃতসরের মোমবাতি মিছিলেও পা মিলিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
    
অন্যদিকে, মৃত পরিবারের দাবি- সর্বজিৎকে শহিদের সম্মান দিয়ে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন করুক কেন্দ্র৷ বৃহস্পতিবার সকালেই সর্বজিতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে৷

তিনি বলেছেন, সর্বজিতের মৃত্যু দুঃখজনক৷ তাঁর দেহ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে৷ পাক সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিদেশ মন্ত্রণালয়৷ অন্যদিকে, সর্বজিতের মৃত্যুতে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিল কেন্দ্র৷

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করা হয়েছে৷ পাশপাশি, সর্বজিতের দেহ দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে৷

বাংলাদেশ সময় : ১০.৩০, তারিখ : ০২.০৫.২০১৩

সুকুমার সরকার, কো-অর্ডিনেশন এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।