ঢাকা, রবিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

সর্বজিতের আগে শিকার হন চামেল সিংহ

কলকাতা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৫৮, মে ২, ২০১৩

সর্বজিত সিংহ-ই প্রথম নন। তাঁর আগেও পাকিস্তানের জেলে ভারতীয় বন্দির মৃত্যুর নজির আছে।

কড়া নিরাপত্তায় মোড়া যে কুখ্যাত কোট লাখপত জেলে রাখা হয়েছিল সর্বজিতকে, সেখানেই গত জানুয়ারিতে মারা গিয়েছেন চামেল সিংহ নামে এক ভারতীয় বন্দি।

চামেলের মৃত্যু ঘিরে টানটান রহস্য ছিল। অনেক প্রশ্ন ভিড় করেছিল। পাকিস্তান মিডিয়রি খবর, পাকিস্তানে চরবৃত্তিতে জড়িত থাকার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ষাট পেরনো চামেলের পাঁচ বছরের জেল হয়েছিল।

যে লাহোর হাসপাতালে সর্বজিতের মৃত্যু হয়েছে, সেখানেই অসুস্থ চামেলকে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মৃত ঘোষণা করেছিলেন ডাক্তাররা। সেদেশের মিডিয়ায় তখন বলা হয়েছিল, চামেলের দেহের প্রাথমিক ময়না তদন্তে দেখা গিয়েছে-  তাঁর ওপর শারীরিক অত্যাচার করা হয়েছে। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ অবশ্য অত্যাচারের কথা অস্বীকার করে।

কোট লাখপত জেলে বন্দিদের রাখা হয় অত্যন্ত অমানবিক পরিবেশে- এমন অভিযোগ অনেকদিনের। এ সংক্রান্ত তথ্যেও অভিযোগের সমর্থন মেলে। সেখানে ৪ হাজার বন্দির থাকার ব্যবস্থা আছে।

তবে বর্তমানে রাখা হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার বন্দিকে! এদের মধ্যে আছেন অন্তত ৩৬ জন ভারতীয়। গত সপ্তাহেই তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ভারত-পাকিস্তান বিচারবিভাগীয় কমিটির ভারতীয় সদস্যরা।

তারা জানান, সর্বজিতের ওপর হামলার আগে তাদের জন্য কার্যত কোনও নিরাপত্তার আয়োজনই ছিল না। মর্মান্তিক হামলা ঘটে যাওয়ার পর জেলের কর্মীরা তৎপর হয়েছেন। তাঁরা অন্য বন্দিদের তাদের কাছে ঘেঁসতে দিচ্ছেন না।

এদিকে সর্বজিত্ সিংহের মৃত্যুতে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বুধবার গভীর রাতে কোমায় আচ্ছন্ন সর্বজিত্ সিংহের মৃত্যু হয় পাকিস্তানের জিন্না হাসপাতালে। মৃত্যুর খবর জানানো হয় ভারতীয় হাই কমিশনকে।

জানানো হয়েছে, মূলত স্নায়ুতন্ত্র পুরোপুরি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। এদিন সকাল থেকে সর্বজিতের মৃত্যুর খবর আসতেই গোটা দেশ জুড়ে বিক্ষোভের রেশ দেখা গিয়েছে।

প্রত্যেকেই এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। অনেকে এই ঘটনাকে সরাসরি হত্যা বলতেও দ্বিধা করেননি। বিজেপির তরফ থেকে শাহনওয়াজ হুসেন কেন্দ্রকে রীতিমতো তোপ দেগেছেন।

তিনি বলেছেন, সরকার এই ঘটনায় কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। সরকারের কঠোর সমালোচনা করছেন অন্য এক বিজেপি নেতা মোক্তার আবাবস নাকভি।

অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে সর্বজিৎ সিংহের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। শিন্দে আরও জানিয়েছেন সর্বজিতের দেহ দ্রুত ভারতে আনার ব্যবস্থা করা হবে।

তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে অন্ত্যষ্টিরও ব্যবস্থা করা হবে। তাঁর পরিবারের তরফ থেকে সর্বজিতকে শহীদ ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছে। এ দিকে সর্বজিত্ সিংহের দেহের ময়নাতদন্তের জন্য জিন্না হাসপাতালে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময় : ১৯৫৩ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৩
সম্পাদনা: সুকুমার সরকার, আউটপুট এডিটর 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।