ঢাকা: চীন তার সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন কর্মসূচিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে প্রযুক্তি হাতে পেতে গুপ্তচর বৃত্তি চালাচ্ছে। সোমবার এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ দাবি করেছে।
ওই প্রতিবেদনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমবারের যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে হামলার চালানোর অভিযোগ তুলে পেন্টাগন।
কংগ্রেসে উত্থাপিত ৮৩ পাতার বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম বিমান তৈরি এবং সমুদ্র প্রতিরক্ষা বাড়াতে যুদ্ধবিমানবাহী একটি জাহাজ তৈরি করার পরিকল্পনায় এগিয়ে গেছে চীন।
চীনের সামরিক বাহিনীর উন্নয়ন সম্পর্কিত প্রতিবেদনটিতে চীনের সাইবারে চৌযৃবৃত্তিকে ‘গভীর উদ্বেগ’-এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার সাইবার হামলার (হ্যাকিং) শিকার হচ্ছে, যেগুলোর কিছু চীনের সরকার ও তার সামরিক বাহিনী চালিয়েছে বলে দাবি করা হয় প্রতিবেদনে। হ্যাকিংয়ের প্রধান উদ্দেশ্যে হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিরক্ষা দফতর, সামরিক পরিকল্পনা ও সরকারি কর্মকর্তাদের গোপন তথ্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন এক কর্মকর্তা জানান, প্রথমবারের মতো পেন্টাগনের বার্ষিক প্রতিবেদনে বেইজিংয়ের কথা উল্লেখ করা হলো যুক্তরাস্ট্রের প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কে হামলা চালানোর জন্য।
সাইবার হামলা চালানোর বিষয় নিয় মার্কিন প্রশাসন যতটা না উদ্বিগ্ন তার চেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন চীনের সামরিক উদ্দেশ্য নিয়ে বলে মন্তব্য করেছেন এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।
প্রতিবেদনে নিয়ে ব্রিফিংকারী পেন্টাগনের পূর্ব-এশিয়া অঞ্চলের উপ সহকারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ডেভিড হেলভে বলেন, “আমার কাছে যেটি উদ্বেগের সেটি হলো চীনের সামরিক আধুনিকায়ন হচ্ছে স্বচ্ছতা আর উন্মুক্ততার অনুপস্থিতিতে যা অন্য দেশগুলো নিশ্চিতভাবে চীনের কাছে জানতে চাইছে। ”
চীন তার সামরিক পরিকল্পনাকে কিছুটা হলেও উন্মুক্ত করেছে। চীনের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে হেভলি বলেন, তারপরেও অনেক উত্তরহীন প্রশ্ন রয়েছে।
দক্ষিণ চীন সাগরে একটি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে জাপান, ফিলিপাইনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব যখন চরমে তখনই পেন্টাগনের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো।
পেন্টাগনের প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, গত মার্চে চীন তার সামরিক বাহিনী ১০ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। ২০১২ সালে যেখানে চীনের সামরিক ব্যয় ছিল ১০ হাজার ৬শ কোটি মার্কিন ডলার ছিল চলতি বছর তা বেড়ে দাঁড়াবে ১১ হাজার ৪শ কোটি মার্কিন ডলারে।
কিন্তু পেন্টাগনের দাবি, ২০১২ সালেই চীনের সামরিক ব্যয় ছিল ১৩ হাজার ৫শ থেকে ২১ হাজার ৫শ কোটি মার্কিন ডলারের মধ্য। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চীনের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ব্যয় দ্বিগুনের বেশি অর্থাৎ ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
সামরিক গবেষণা ও উন্নয়নে প্রযুক্তির মাত্রা এবং বিশেষজ্ঞ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে চীন। এসবের মধ্যে শিল্পগত ও প্রযুক্তিগত গুপ্তচর বৃত্তিতে রাষ্ট্রীয় সহায়তা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com