মুম্বাই: পাকিস্তানকে সন্ত্রাসীদের ‘নিরাপদ স্বর্গরাজ্যে’ পরিণত করায় দেশটির সমালোচনা করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি। ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলায় নিহতদের এক স্মরণ অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন ভারত সফররত প্রেসিডেন্ট।
চারদিনের এ সফরের শেষ দিন সারকোজি বলেন, ‘পাকিস্তানে সন্ত্রাসী চক্রের অবস্থান এবং সেখান থেকে ভারতসহ আফগানিস্তানে মোতায়েন ফ্রান্স ও অন্যান্য বাহিনীর ওপর হামলার বিষয়টি অপ্রত্যাশিত। ’
ওবেরয় হোটেলে তিনি আরও বলেন, ‘এটা খুবই অপ্রত্যাশিত যে ভারতের নিরাপত্তার জন্য প্রতিবেশী দেশে অবস্থানরত সন্ত্রসীরা হুমকিস্বরূপ। একইসঙ্গে পাকিস্তানের সন্ত্রাসীদলের এসব দলগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়াও একইসঙ্গে সারা বিশ্বের জন্য অপ্রত্যাশিত। ’
২০০৮ সালের নভেম্বরে ভারতের অন্যতম প্রধান বিলাসবহুল এ হোটেলেও হামলা করেছিলো সন্ত্রাসীরা।
এদিকে, এ বিষয়ে সারকোজি আরও বলেন, ‘আমি সকল পাকিস্তানিকেই তাদের প্রচেষ্টা বাড়ানো এবং এসব অপরাধীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে তিনি প্রত্যয়ী কন্ঠে বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে না। ’
এর আগে স্ত্রী কার্লা ব্রুনিকে নিয়ে মুম্বাইয়ের দক্ষিণে নিহত ১৮ জন পুলিশের সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক দেন সারকোজি। এখানে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই এ প্রাণ হারান ওই পুলিশেরা।
২০০৮ সালের ওই হামলায় সন্ত্রাসীরা একইসঙ্গে ইহুদি কেন্দ্র, জনপ্রিয় পর্যটক রেস্তোরা এবং শহরের প্রধান রেলওয়ে স্টেশনে আক্রমণ করেন। এসব হামলায় তখন দুই ফরাসি নাগরিকসহ মোট ১৬৬ জন নিহত ও তিন শতাধিক লোক আহত হন।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার সঙ্গে জড়িতদের মুম্বাই হামলার সঙ্গেও যোগাযোগ আছে। আর এক্ষেত্রে মূলত পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বাকে (এলইটি) দায়ী করা হয়। একইসঙ্গে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সাহায্যে দলটি এ হামলা চালায় বলেও অভিযোগ আছে।
এদিকে, বর্তমানের সাড়া জাগানো ও বিতর্কিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসে ফাঁস হয়ে যাওয়া শত শত গোপন মার্কিন নথি থেকে জানা যায় যে পাকিস্তানে বিচারাধীন লাখভি এমনকি জেলে থাকা অবস্থাতেই এলইটি পরিচালনা করেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি কিনটন এক তারবার্তায় এ অভিযোগ করেন বলে ফাঁসকৃত ওই গোপন দলিল সূত্রে জানা যায়।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১০