ঢাকা: রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ার দীর্ঘ ১৬ দিন (বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে ১৭ দিন) পর কিশোরী পোশাক শ্রমিক রেশমার জীবিত ও অক্ষত ফিরে আসার বিষয়টি সাড়া ফেলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও।
ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিরে আসার পর রেশমা কথা বলেন, দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে।
২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে বাংলাদেশের সর্বত্র নেমে আসে শোকের ছায়া। ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে একের পর এক লাশ। ধসের ১৬ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর যখন ধ্বংসস্তূপ থেকে আর কাউকেই জীবিত ফেরত পাবার আশা নেই, ঠিক তখনি রেশমার সাহায্যের আবেদন চোখে পড়ে এক উদ্ধারকর্মীর। দুর্বল হাতে একটি রড নাড়িয়ে শব্দ করে তিনি ওই উদ্ধারকর্মীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন।
এরপর বাকিটুকু ইতিহাস।
বর্তমানে একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রেশমা। একটু সুস্থ হয়ে ওঠার পর সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। উদ্ধারকর্মীর আওয়াজ শুনে রেশমা চিৎকার করে ওঠেন, “আমি বেঁচে আছি,আমাকে বাঁচান!”।
রেশমা জানান, ভবনটি ধসে পড়ার সময় তিনি তৃতীয় তলায় কাজ করছিলেন। পরে ধ্বংস্তূপের ভেতর হামাগুড়ি দিয়ে ভবনের বেসমেন্টে গিয়ে আশ্রয় নেন তিনি।
উদ্ধারের পর রেশমা এখন প্রায় সুস্থ। তবে এখনও পুরো বিষয়টি অনুধাবনের চেষ্টা করছেন তিনি।
নিজের বেঁচে থাকার বিষয়টিকে পুরোপুরি উপরওয়ালার ইচ্ছে হিসেবেই মনে করছেন তিনি। একই সঙ্গে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ারও অঙ্গীকার ধরা পড়ে তার কথায়।
তবে মৃত্যুপুরী থেকে বেঁচে ফিরে আসার পর রেশমা প্রতিজ্ঞা করেছেন, আর কখনই পোশাক কারখানায় কাজ করবেন না তিনি।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১১২৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছে আরো অনেকে। তাদের মধ্যে অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গ হয়ে গেছেন। পোশাকশিল্পের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এ ঘটনার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের কারখানার পরিবেশ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৩
সম্পাদনা: বুশরা ফারিজমা হুসাইন ও রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর