ঢাকা: ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শিশুদের সহিংসতার কাজে এবং সেনাবাহিনীতে জড়িত করা হচ্ছে। এ অভিযোগ করেছে এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস।
রিপোর্টে বলা হয়, এসব শিশুর ৫০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয় ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য জম্মু এবং কাশ্মীরে। বাকি আড়াই হাজার শিশুকে নিয়োগ দেওয়া হয় পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন প্রদেশ (পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উড়িষ্যা) থেকে।
কয়েক দশক ধরে ভারত সরকার কাশ্মীরের উত্তর প্রদেশে বিদ্রোহীদের দমনে ব্যাপক কাজ করে আসছে বলে রির্পোটে বলা হয়েছে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি প্রদেশে মাওবাদী বিদ্রোহীরা কমিউনিজম প্রতিষ্ঠায় সরকারের সঙ্গে লড়াই করে আসছে। প্রদেশগুলোতে মাওবাদী বিদ্রোহীরা “নকশাল” নামে পরিচিত।
মাওবাদীদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিজস্ব শিশু সংগঠন রয়েছে। তারা আদিবাসী প্রত্যেক পরিবার থেকে জোরপূর্বক একটি করে শিশু নিয়ে “শিশু সংগঠন” তৈরি করা হয়।
রির্পোটে বলা হয়, মাওবাদীরা বিভিন্ন বয়সি শিশুদের বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। ১২ বছর বয়সি নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিশুদের প্রাথমিকভাবে গুপ্তচর বা তথ্য সরবরাহের কাজে ব্যবহার করা হয়। এসময় তাদের ছোটখাট অস্ত্র যেমন-৩০৩ রাইফেল পরিচালনারও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
১২ বছরের বেশি বয়সি শিশুদের ব্যবহার করা হয় যোদ্ধা হিসেবে। এছাড়া তাদের স্থলমাইন তৈরি ও পেতে রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন বুদ্ধিমত্তার উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিশোরি মেয়েদেরও ছেলেদের মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এশিয়ান সেন্টারের তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, অধিকাংশ শিশুই জঙ্গিদের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত। উভয় বিদ্রোহীই (মাওবাদী ও ইসলামপন্থি জঙ্গি) সহিংসতায় শিশুদের ব্যবহার করে থাকে। এমনকি সরকারও শিশুদের ব্যবহার করে থাকে বলে রির্পোটে বলা হয়।
এ বিষয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে শিশুদের “চাইল্ড পুলিশ অফিসার” হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১০ সালে জাতিসংঘ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, এই অঞ্চলগুলোতে নকশালদের সহিংসতায় শিশুদের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বিদ্রোহীরা আদিবাসী গ্রামবাসীদের প্রত্যেক পরিবার থেকে চার থেকে পাঁচটি শিশুকে দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।
জাতিসংঘ এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ থেকে বলা হয়, নকশাল বিদ্রোহীরা স্কুলগুলোতে অত্যন্ত সুকৌশলে হামলা চালায় এবং গ্রামবাসীকে বোঝানো হয় সরকার মাওবাদী বিদ্রোহীদের দমনে স্কুল ভবনে হামলা চালিয়েছে।
এশিয়ান হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’র শিশু অধিকার বিষয়ক গবেষক বেডে শেপার্ড জাতিসংঘের প্রকাশিত তথ্যের বিষয়ে বলেন, সব ধরনের সংঘাতে শিশুদের অপব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভারতে নিরাপত্তা বাহিনী ও মাওবাদী বিদ্রোহী উভয়ই শিশুদের ক্ষতি করছে। তারা শিশুদের পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে যা তাদের বাকি জীবনে প্রভাব ফেলে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৩
সম্পাদনা: জনি সাহা, নিউজরুম এডিটর/আরআর; জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর