ভূপাল: আগ্রার তাজমহলটি যখন শতশত বছর ধরে দর্শণার্থীদের বিমোহিত করছে। ঠিক তেমনি অবহেলায় ধ্বংস হচ্ছে ভূপালের তাজমহলটি।
ভূপালের ১১ তম শাসক নওয়াব শাহ জাহান বেগমের (১৮৬৮ থেকে ১৯০১) রাজত্ব কালে তাজমহলটি নির্মাণ করেছেন। এটি ছিলো তার বাসস্থান। তবে আগ্রার তাজমহলের চেয়ে ভূপালের তাজমহলটির কিছুটা ব্যাতিক্রম। সম্্রাট শাহজাহান তাজমহলে স্ত্রীর সমাধি বানিয়েছেন। কিন্তু বেগম তার স্বামীর সমাধি হিসেবে তাজমহলটি ব্যবহার করেন নি।
ওই তাজমহলটি তৈরি করতে দীর্ঘ ১৩ বছর (১৮৭১ সাল থেকে ১৮৮৪ সাল) সময় লাগে। খরচ হয় ৭০ লাখ রুপি। ভূপালের তাজমহরটি এশিয়ার অন্যতম বড় মসজিদ তাজ উল মসজিদের পাশে অবস্থিত।
ভবনটির কাজ শেষ করার পর বেগম এতোই অভিভূত হয়ে পড়েন যে তিনি জয়েশ-ই তাজমহলের তিন বছর ব্যাপি অনুষ্ঠান উদযাপন করেন।
ভবনটি নির্মাণে ব্রিটিশ, ফ্রান্স, মোগল, আরব এবং হিন্দু স্থপতিরা কাজ করেছেন। ভবনটিতে ১২০টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে একটি শিশ মহল এবং শ্রাবণ ভাদ্র প্যাভিলনটি সবচেয়ে দর্শণীয়।
ইতিহাসবিদ সৈয়দ আক্তার হুসাইন আইএএনএসকে জানান, স্বাধীনতার পর ভূপালের শেষ শাসক নওয়াব হামিদুল্লাহ খান ভবনটিতে সিন্ধু উদ্বাস্তুদের থাকার ব্যবস্থা করেন। চার বছর পর তাদের বিরাগরে স্থানাস্তরের আগ পর্যন্ত তারা এখানেই থাকেন। ওই সময় ভবনের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়।
হুসাইন বলেন, তাজ ভূপালের সবচেয়ে বড় বাড়ি। এর ৫০ বর্গফুটের শ্রাবণ ভাদ্র প্যাভিলনটি খুবই সুন্দর। এটি সৃজনশীল এবং দর্শণীয়।
সবিতা রাজ গত ছয় বছর দরে ভূপালের তাজকে তুলে ধরতে কাজ করছেন। তিনি ফ্রান্সের স্থপতি সার্গেই সেন্তালিকে আমন্ত্রণ জানান। রাজের মতে ভূপালের তাজমহল বিশ্বের সবচেয়ে উৎকৃষ্টস্তান।
২০০৫ সালে মধ্যপ্রদেশ সরকার স্থানটিকে ঐতিহাসিক ঘোষণা করেন। কিন্তু এরপর থেকে এর উন্নয়নে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। রাজ্য স্থাপত্য কমিশনার অশোক শাহ বলেন এর উন্নয়নে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি-না সে বিষয়ে তিনি জানেন না। তবে তার সহকর্মী বলেছেন পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। আশা করি এসংক্রান্ত তহবিল দ্রুতই পাওয়া যাবে।
তবে স্থপতিরা ভূপালের তাজমহল ও আগ্রার তাজহলের মতো দর্শণীয় স্থান হতে পারবে বলে বিশ্বাস।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১০