নাইজেরিয়ার রাজনীতিতে নেদারল্যান্ড ভিত্তিক তেল ও গ্যাস প্রতিষ্ঠান শেল অনেক প্রভাবশালী। প্রতিটি সরকারের আমলেই সরকারের মধ্যে গুপ্তচরের কাজ করেন এ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা।
উইকিলিকসে ফাঁস করা তথ্যমতে, অ্যাংলো-ডাচ ফার্মের তৎকালীন নাইজেরিয়ার উচ্চ পদস্থ নির্বাহী অ্যান পিকার্ডো নিজেই তখনকার মন্ত্রণালয়গুলোর তথ্য জানার জন্য কোম্পানির কর্মীদের সেখানে ঢোকানোর বিষয়টি জানান।
একইসঙ্গে চীন ও রাশিয়ার তেল সমৃদ্ধ দেশটিতে আধিপত্য বিস্তারের বিষয়েও শঙ্কিত ছিলো ওই কোম্পানির কর্মচারী-কর্মকর্তারা।
সোয়েল অ্যাকশন নাইজেরিয়ার কেলেস্টিনা অ্যাকপোব্যারি বলেন, ‘শেল এবং নাইজেরিয়ার সরকার একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। শেল সব জায়গায় আছে। তারা নাইজেরিয়ার প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একটি চোখ ও কান দিয়ে রেখেছে। ’
‘প্রতিটি সম্প্রদায়ে তাদের বেতনভুক্ত কর্মচারী আছে। এ কারণেই তারা সব খবরই পেয়ে থাকে। নাইজেরিয়ার সরকারের থেকেও বেশি ক্ষমতাবান তারা। ’
গত বছরের অক্টোবরে পিকার্ডোর কাছে চীনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন কিনা জানতে চান মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবিন স্যানডের্স। এ বিষয়ে পিকার্ডো বলেন, নাইজেরিয়ার সরকারের কাছে দেওয়া আমাদের প্রস্তাব ততটা ভাল নয়, এ বিষয়ে আমরা অবগত। কিন্তু চীন ও রাশিয়ায় প্রবেশের সুযোগ তাদের আছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ফাঁস হওয়া বার্তায় বলা হয়, ‘পিকার্ডো বলেন, তাদের কাছে চীন ও রাশিয়া উভয় দেশেই তথ্য পাঠানোর প্রমাণ আছে। তিনি আরও বলেন, নাইজেরিয়ার সরকার ভুলে গেছে দেশটির প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে শেলের লোক আছে এবং এখানে সংঘটিত সব কাজের তথ্যও আমাদের কাছে আছে। ’
চলতি বছর পিকার্ডো নাইজেরিয়া ত্যাগ করেন এবং বর্তমানে শেলের প্রধান হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত আছেন।
১৯৫৬ সালে শেল দেশটির নাইজার ডেলটায় প্রথম তেল আবিষ্কার করে এবং এর দুই বছর পর তেল উত্তোলন শুরু করে।
এরপর থেকেই এটা দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। তবে একইসঙ্গে পরিবেশ দূষণ ও ডেল্টার অনবরত দারিদ্র্যের জন্য পরিবেশবাদী ও সম্প্রদায়ের কর্মীদের রোষের শিকার হন তারা।
শেল দৈনিক ৬ লাখ ৬৩ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন করে বলে অক্টোবরের ওই আলোচনায় পিকার্ডো জানান। এর মধ্যে প্রায় ৯ লাখ আবার উত্তোলন করা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১০