ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের কানাসাস মেডিকেল কলেজের ডাক্তাররা ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। সুপারগ্লু ব্যবহার করে মাত্র তিন মাস বয়সী এক শিশুর ব্রেন অ্যানিউরিজম রোগের চিকিৎসা করে রীতিমত হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানে।
দ্য নিউইয়র্ক ডেইলি জানায়, তিন সপ্তাহ আগে কানাসাসের ওলাথে ১৬ মে জন্ম নেয় আশলিন জুলিয়ান।
জুলিয়ানের আরো তিন ভাইবোন রয়েছে। জন্মের সময় আশলিনের কোন ধরণের স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছিল না।
কিন্তু এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই শিশুটির মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করেন তার বাবা-মা। শিশুটি চিৎকার- চেঁচামেচি ও বমি করতে থাকে। দ্রুত আশলিনকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে ডায়াগনোসিস করা হয়।
ডায়াগনোসিসে আশলিনের ব্রেনে অ্যানিউরিজম রোগ ধরা পড়ে। কাঠবাদাম আকৃতির অ্যানিউরিজমটি আশলিনের মাথার ঠিক মধ্যখানে ছিল। সেখান থেকেই রক্ত ঝরছিল।
মস্তিষ্ক থেকে আশলিনের রক্তক্ষরণ দেখে আমরা খুবই ভয় পাই- শিশুটির মা জিনা জানালেন।
অ্যানিউরিজম এক ধরণের মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত রোগ। মাথাব্যথা, অস্বস্তিবোধ, বমি, জ্ঞান হারানো ইত্যাদি এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ।
কানাসাস মেডিকেলের ডাক্তাররা জানালেন, নবজাতক শিশুদের মধ্যে এই রোগ খুবই বিরল। আমাদের কাছে ব্যবহার করার মতো ততটা ছোট সার্জিকাল যন্ত্রপাতিও ছিল না।
সমস্যা নিরসনে ডাক্তাররা জরুরি বৈঠক ডাকেন। নিউরোসার্জন কোজি এবারসন জানান, এর কোন সমাধান আমরা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এটা কোন পুঁথিগত বিদ্যার বিষয় ছিল না।
অবশেষে এবারসন এবং একদল ডাক্তার অ্যানিউরিজম থেকে রক্তপাত বন্ধে আঠা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ডাক্তাররা ক্যাথারের মাধ্যমে অতিসূক্ষ্ম তার ব্যবহার করে শিশুটির মস্তিষ্কে যে অংশে অ্যানিউরিজমটি ছিল সেখানে সুপারগ্লু দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া দেয়।
প্রথমবারের মতো ব্যবহার করেই সাফল্য পায় চিকিৎসক দল। ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় রক্তপাত।
ডাক্তারদের এই সাফল্যে দারুণ উচ্ছ্বসিত শিশুটির বাবা-মা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৩
সম্পাদনা: কবির হোসেন, নিউজরুম এডিটর