ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

অপহরণের ৩০ বছর পর...

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১০
অপহরণের ৩০ বছর পর...

বেইজিং: মাত্র চার বছর বয়সে চীনের চংকিং থেকে অপহৃত হয়েছিলেন উ জিউবিং। ত্রিশ বছর পর তার মা-বাবা তাকে ফিরে পেয়েছেন।

দীর্ঘ এই সময়ে উ জিউবিং কে তিনবার বিক্রি করা হয়েছে। অবশেষে চলতি মাসের চার তারিখে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, হোবেই অঞ্চলে উ জিউবিং এর বাবা উ মাওশেং ছুতোরমিস্ত্রির কাজ করতেন। তার মা লি শিকুন তাকে ও তার বোনকে চংকিং ইয়ুনইয়ান কাউন্টিতে লালন-পালন করেন।

শিকুনের প্রতিবেশি ওয়াং তার সন্তানসহ হুবেই প্রদেশে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার পর পরিবারটির জীবনে ওলটপালট হয়ে যায়।

ওয়াং তাদের হুবেই-এর শহর জিয়াংইয়াং এ নিয়ে যায়। সন্তানদের হোটেলে এক বন্ধুর কাছে রেখে  শিকনকে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে যেতে বলে ওয়াং।

তার উদ্দেশ্য ছিল শিকুনকে ঝংজিয়াং শহরে কারও কাছে বিক্রি করে দেওয়া। ওয়াং এর উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে লুকিয়ে হোটেলে চলে আসেন শিকুন। কিন্তু সেখানে তিনি তার ছয় বছর বয়সী মেয়েকে পেলেও ছেলেকে আর খুঁজে পাননি।

১৯৮০ সালে মাত্র চার বছর বয়সে সে অপহৃত হয়। জিউবিংয়ের বাবা-মায়ের বয়স ৬০ ছাড়িয়ে গেছে।

পুলিশকে খবর দেওয়া হলে ওয়াং ছেলেকে কোথায় রেখেছে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি। এরপর ওয়াং গা ঢাকা দিলে এ বিষয়ে আর খোঁজখবর নেওয়া সম্ভব হয় নি।

চলতি বছরের মে মাসে হুবেইয়ে শিশু পাচার নিয়ে তদন্তের সময় এই মামলাটি পুনরায় শুরু করা হয়। পুলিশ জুইবাং এর অপহরণকারী ওয়াংকে (৫৮) তার শহর থেকে গ্রেপ্তার করে। ওয়াং পুলিশকে বলে রেল স্টেশনে টাং নামের একজনের কাছে সে জিউবিংকে বিক্রি করে দেয়। পরে টাং তাকে হেনান প্রদেশে লিউ নামের এক নারীর কাছে বিক্রি করে দেয়।  

এরপরে লিউ তার এক আত্মীয়ের কাছে দিলে সে ব্যক্তিও তাকে বিক্রি করে দেয়। পুলিশ ৭৫ বছর বয়সী এক লোকের কাছ থেকে জিউবিংকে খুঁজে পায়। এই লোকটি পুলিশকে জানায় সে কয়েক বছর আগে এই ছেলেকে দত্তক নিয়েছে। তার নাম রেখেছে ওন দংশেং।

পরে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পুলিশ নিশ্চিত হয় এই ওন দংশেং-ই নিখোঁজ হওয়া উ জিউবিং।

সাংহাইয়ের একটি সংবাদসংস্থার মাধ্যমে খবর পেয়ে জিউবিং এর বৃদ্ধ মা-বাবা জিয়াংইয়াং এর পুলিশ স্টেশনে আসেন। হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে আবার ফিরে পেয়ে তারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। সন্তানকে জড়িয়ে ধরে কান্না জড়িত কণ্ঠে তারা বলেন, ‘আমরা তোমার বাবা-মা। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ১৩ ডিসেম্বর ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।