ঢাকা, রবিবার, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ম্যান্ডেলার অবচেতন হওয়ার গুজব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:০১, জুলাই ৫, ২০১৩
ম্যান্ডেলার অবচেতন হওয়ার গুজব

ঢাকা: ম্যান্ডেলা স্থায়ীভাবে বোধশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন-এমন তথ্য কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ম্যান্ডেলার চিকিৎসক বলেছেন, ‘স্থায়ীভাবে বোধশক্তিহীন অবস্থায়’ রয়েছেন।

লাইফ সাপোর্ট যন্ত্রটি খুলে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এ গুজব ছড়িয়ে পড়ার পরেই সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বিবৃতি দেয়া হয়। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ম্যাক মহারাজ বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, “(বৃহস্পতিবার) বিকেলের বিবৃতিতে আমরা নিশ্চিত করেছিলাম, প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা হাসপাতালে মাদিবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। মাদিবার অবস্থা গুরুতর কিন্তু স্থিতিশীল। ”

ম্যান্ডেলার অবচেতন হওয়ার খবরটি নাকচ করে দিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।

ম্যান্ডেলা সামরিক স্বাস্থ্য সেবা, সরকারি-বেসরকারি খাতের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান মহারাজ। ম্যান্ডেলাকে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাসা ম্যাশেল জানান, ম্যান্ডেলা বিভিন্ন সময়ে অবস্থার অবনতি হলেও কষ্টবোধ করেননি। তবে আদালতে পেশ করা নথিপত্রে জানানো হয়েছিল, ম্যান্ডেলা লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। বুধবার দেশের এক আদালতকে ম্যান্ডেলার  মেয়ে মাকাজিউয়ি জানান, তার বাবার অবস্থা ‘বিপজ্জনক’ এবং তিনি লাইফ সাপোর্ট যন্ত্রের সহায়তা শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন।

ওই আদালত ম্যান্ডেলার পারিবারিক দ্বন্দ্ব নিয়ে একটি মামলার রায় দেয়। ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলার বিরুদ্ধে করা মামলায় ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাসা ম্যাশেল, মাকাজিউয়িসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য জয় পান।

ম্যান্ডেলার গ্রাম কুনুর কবর থেকে পরিবারের তিন সদস্যের দেহাবশেষ উত্তোলন করে অন্য স্থানে দাফন করেছিলেন মান্ডলা। কিন্তু পরিবার সেগুলো পুনরায় কুনুর করবে দাফনের দাবি জানালেও মান্ডলা তাতে কান দেননি। অবশেষে আদালতে বিষয়টি গড়ালে তার বিপক্ষে রায় যায়।

৯৫ বছর বয়সী ম্যান্ডেলা দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে সংক্রমণজনিতে রোগে ভুগছেন। ৮ জুনসহ দু বছরে পাঁচবারের মতো হাসপাতালে ভর্তি হন শান্তিতে নোবেলজয়ী ম্যান্ডেলা।

১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই জন্ম গ্রহণকারী ম্যান্ডেলা সাউথ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট। দেশটিতে কালো আর সাদাদের ভেদাভেদ দূর করতে ছোট বয়স থেকেই আন্দোলন করে অবশেষে জয়ী হন ১৯৯০ সালে।

১৯৯০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবার আগে ৭৮ বছরের জীবনের ২৭ বছরেই জেলে কেটেছে তার।

বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে অসামান্য অবদান রাখায় ১৯৯৩ সালে দেশের শেষ শেতাঙ্গ প্রেসিডেন্ট ডি ক্লার্কের সঙ্গে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ম্যান্ডেলা।

১৯৯৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে ঐতিহাস রচনা করেন ‘মাদিবা’। স্বেচ্ছায় ১৯৯৯ সালে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর নিজের প্রতিষ্ঠান নেলসন ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এইচআইভি, গ্রামীণ উন্নয়ন, বিদ্যালয় তৈরি ইত্যাদি মানবসেবামূলক কাজে নিজেকে নিবেদিত করেন।
শান্তিতে নোবেলজয়ী ম্যান্ডেলা ছয়টি নামে পরিচিত। তাদের একটি মাদিবা। এটি তার গোত্রীয় নাম।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর-eic@banglanews24.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।