ঢাকা, রবিবার, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

মিশরে সহিংসতায় নিহত ৩০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:৩৮, জুলাই ৬, ২০১৩
মিশরে সহিংসতায় নিহত ৩০

ঢাকা: বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেছিল মিশরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরোধীরা। কিন্তু এখন বিক্ষোভ করছে মুরসির সমর্থকরা।

মুরসিকে উৎখাতের বিরুদ্ধে এবং ইসলামি শাসনের পক্ষে মিশরের রাস্তায় এখন মুরসি ও মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থকদের ঢল। দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করছেন তারা।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানী কায়রোয় বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করে মুরসিপন্থিরা। আলেক্সজান্দ্রিয়াসহ দেশের বিভিন্ন শহরেও বিক্ষোভ হয়। মুরসিপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনী গুলি ছুড়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে।

মুরসিপন্থিরা শুক্রবারকে ‘প্রত্যাখান দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে বিক্ষোভ করার প্রস্তুতি নিলে সেনাবাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অনুমতি দেয়। কিন্তু বিক্ষোভ আর শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে না। মুরসিপন্থি ও বিরোধীদের মধ্যে দেশের প্রায় সবখানেই সহিংসতার ঘটনা ঘটছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

মুরসিকে বুধবার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী প্রধান আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি ক্ষমতাচ্যুত করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। আর আহত হয়েছে প্রায় হাজার খানেক মানুষ।

তবে মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও মেডিকেল কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কমপক্ষে ২৬ জন নিহত ও ৮৫০ জনের বেশি জন আহত হয়েছে।

নিজেদের ৫ সমর্থক রিপাবলিকান গার্ডের সদর দফতরে সামনে সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয় বলে দাবি করেছে মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা দ্য ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি।

মুরসির সমর্থকরা বিক্ষোভ নিয়ে একটি সেনা ব্যারাকের দিকে অগ্রসর হলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুড়ে বলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমের মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা জানিয়েছেন। ওই সংবাদদাতা বলেন, “আমি নিজেই দেখেছি, এক বিক্ষোভকারী সেনা ব্যারাকের তারকাটা বেয়ে ওঠার সময় ব্যারাকের ভিতর থেকে গুলি ছোড়া হয়। রক্তে ভিঁজে যায় ওই বিক্ষোভকারীর দেহ। ”

তবে গুলি করার কথা অস্বীকার করা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা তাজা গুলি ছুড়েনি।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আহমেদ অলি বলেছেন, “আমরা কারও পক্ষ নিচ্ছি না। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের জীবন রক্ষা করা। ”

এদিকে শুক্রবার মন্ত্রীসভা ভেঙে দিয়েছেন নতুন প্রেসিডেন্ট আদলি মাহমুদ মনসুর। তিনি নতুন গোয়েন্দা প্রধানকে নিয়োগ দিয়েছেন। প্রধান কাজ নির্বাচনের আয়োজনে কোনো উদ্যাগ না নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণের একদিনের মাথায় গোয়েন্দা বাহিনীতে এ পরিবর্তনকে অনেকে ‍অন্য চোখে দেখছেন।

ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির প্রধান সাদ এল-কাতাতনি, উপপ্রধান রাশেদ আল-বায়োউমিকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে শুক্রবার জানায় মিশরের নীল টিভি।

দেশের প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়টি মুরসিবিরোধীরা ক্যু হিসেবে না দেখলেও মুরসি সমর্থকরা তা দেখছে সংবিধান পরিপন্থি পদক্ষেপ হিসেবে। মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহল মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে।

সৌদি আরব মুরসিকে সরানোর জন্য তারবিরোধীদের প্রশংসা করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র পক্ষে-বিপক্ষে তেমন মন্তব্য না করলেও বলেছে, তারা বেশ উদ্বিগ্ন। ওয়াশিংটন বর্তমান পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন মিশরীয়দের প্রতি।

যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতা বন্ধে সেনাবাহিনীকে যথাযথ ভূমিকা পালন করার দাবি জানিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনও মিশরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর-eic@banglanews24.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।