ঢাকা, বুধবার, ১২ ভাদ্র ১৪৩২, ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

স্বচ্ছতা আনতে পশ্চিমবঙ্গে অনলাইনে অনার্সে ভর্তি

ডেস্ক রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:১৯, আগস্ট ২২, ২০১৩
স্বচ্ছতা আনতে পশ্চিমবঙ্গে অনলাইনে অনার্সে ভর্তি

ঢাকা: যে অভিযোগ সাধারণতঃ করা হয়ে থাকে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বড় ভাইদের বিরুদ্ধে। এবার তা থেকে বাদ গেল না কলকাতার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কেও।



অর্থাৎ  নিজেদের পছন্দমতো ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানোর দাবিতে কলেজে কলেজে গোলমাল পাকানোর অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) বিরুদ্ধে।

এ অবস্থায় অনার্সে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে সব বিশ্ববিদ্যালয়েই কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন পদ্ধতি চালু করতে চায় রাজ্য উচ্চশিক্ষা সংসদ। আগামী বছর থেকেই যাতে এই পদ্ধতি চালু হয়ে যায়, সেজন্য নির্দেশিকা জারি করতে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে তারা। বুধবার সংসদের বৈঠকের পরে এ কথা জানান চেয়ারম্যান সুগত মারজিৎ।

এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন কলেজ অধ্যক্ষদের একটা বড় অংশ। অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি বাধ্যতামূলক হলে পছন্দসই ছাত্র নেওয়াকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলে রাশ পড়বে বলে আশা করছেন অধ্যক্ষেরা।

কিন্তু সেই সঙ্গেই তাঁদের প্রশ্ন, এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর হবে? কারণ, কলেজগুলিতে অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি বাধ্যতামূলক করে বছর দুয়েক আগেই নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু অনেক কলেজেই তা মানা হয় না।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতানেত্রী এবং ছাত্র সংগঠনের চাপই অনলাইনে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা বলে অভিযোগ অনেক অধ্যক্ষের। সুগত মারজিৎ জানান, সংসদ কলেজের হাতে না-রেখে স্নাতক স্তরে ভর্তি প্রক্রিয়ার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়গুলির হাতে রাখার পক্ষপাতী ।

তিনি এ দিন বলেন, “বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছর কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন পদ্ধতিতে ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রেও সেটা বাধ্যতামূলক করার জন্য সরকারকে নির্দেশিকা জারি করতে বলা হবে। ” এতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসবে বলে মনে করছে সংসদ।

অনলাইনে ছাত্র ভর্তির পুরো প্রক্রিয়াটি ঠিক কেমন হবে?
সংসদের এক সদস্য প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করে বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি আবেদনপত্র নিয়ে পূরণ করবেন। পরে কাউন্সেলিং করে কলেজে কলেজে অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি হবে। ”

যথাসম্ভব গোলমাল এড়ানোর জন্যই অনলাইন পদ্ধতির কথা ভাবা হচ্ছে। সম্প্রতি জয়পুরিয়া কলেজে নিজেদের পছন্দমতো ছাত্র ভর্তি করানোর দাবিতে গোলমাল পাকানোর অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, কর্তৃপক্ষ কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

পরে শিক্ষামন্ত্রী ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্তক্ষেপে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেন তাঁরা। রাজ্য জুড়েই কলেজে কলেজে এমন ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। অনলাইনে ভর্তি চালু করে তাঁরা সুফল পেয়েছেন বলে জানান বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার।

তিনি জানান, এ বার কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতিতে ছাত্র ভর্তি চালু হওয়ায় তাঁরা গোলমাল এড়াতে পেরেছেন। উপাচার্যের কথায়, “৯০টি কলেজে স্নাতক স্তরে ছাত্র ভর্তি হয়েছে। কোথাও কোনও গণ্ডগোল হয়নি। ”

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, “সরকার যদি এই পদ্ধতি চালু করার জন্য নির্দেশিকা জারি করে, তা হলে বিবেচনা করা হবে। বর্ধমানে এ বছর তা চালু হয়েছে, আমাদেরও করতে তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ”

নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত দাস, জয়পুরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায়েরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। স্বাগত জানিয়েছে টিএমসিপি-ও।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তমোঘ্ন ঘোষ বলেন, “কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইন পদ্ধতিতে ছাত্র ভর্তি হলে তাতে পড়ুয়াদেরই সুবিধা হবে। এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। ”

স্নাতক স্তরের পাশাপাশি সংসদের এ দিনের বৈঠকে স্নাতকোত্তরে ছাত্র ভর্তি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সুগতবাবু জানান। তিনি বলেন, “আগামী বছর থেকে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্নাতকোত্তরের মোট আসনের ৫০ শতাংশে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ভর্তির ব্যবস্থা চালু করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে। ওই সব আসনে ভর্তি হবে সাধারণ প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে। ” উচ্চ মাধ্যমিকে যাঁরা ভাল ফল করবেন, স্নাতক স্তরে পড়াশোনার জন্য এককালীন স্কলারশিপ এবং ৪০ বছরের কম বয়সি কলেজ-শিক্ষকদের জন্য গবেষণা খাতে অনুদান দেওয়া হবে বলেও জানান সংসদ-প্রধান।

সূত্র: দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা, কলকাতা
বাংলাদেশ সময় : ১১৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৩
এসএস/বিএসকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।