আগরতলা (ত্রিপুরা): তেলেঙ্গেনা ইস্যুর জের এখন ত্রিপুরাতেও। এবার এখানেও উঠল আলাদা রাজ্যের দাবি।
আলাদা রাজ্যের দাবিতে মিছিল সমাবেশ করেছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল আইপিএফটি। এদিন দলের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে রাজ্যপাল দেবানন্দ কোয়ারকে। কিন্তু রাজ্যপাল না থাকায় স্মারকলিপি দেওয়া হয় রাজভবনের জয়েন্ট সেক্রেটারি নবনীতা রায়ের কাছে।
আইপিএফটি’র সমাবেশে এসে তাদের আলাদা রাজ্যের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গোর্খাল্যান্ড আন্দলনের নেতা দাওয়াপাতি। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সর্বভারতীয় স্মল স্টেট ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট রামকৃষ্ণ বাবা তোমর।
ত্রিপুরাকে ভেঙে আলদা রাষ্ট্র করার দাবি নতুন কিছু নয়। এখানে এ দাবিতে মাথা চাড়া দিয়েছে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। রাজ্যের বেশ কিছু আঞ্চলিক দল এ দাবিতে রাজনীতি করেছে বহু দিন ধরে। মূলত ত্রিপুরার বিভিন্ন উপজাতি সংগঠনের নেতারা এ দাবিতে সোচ্চার ছিলেন। যদিও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্রমাগত অভিযান তাদের দুর্বল করে।
কিন্তু আগস্ট মাসের প্রথম দিকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি অন্ধ্রপ্রদেশকে ভেঙে আলাদা তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন করার সিদ্ধান্তে ঘৃতাহুতি পড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় আলাদা রাজ্য গঠনের দাবি। আসামে এ দাবি নিয়ে চলছে হিংস্র আন্দোলন। ঠিক একই অবস্থা গোর্খাল্যান্ডেও। এবার আন্দোলনের রেশ এসে পড়ল ত্রিপুরাতেও।
ত্রিপুরার আঞ্চলিক দল আইপিএফটি নতুন করে আলাদা রাজ্য গঠনের দাবি করছে। তারা এ দাবিতে শুক্রবার সমাবেশ করে রাজধানী আগরতলাতে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলের কর্মী সমর্থকরা এদিন সকালে এসে জড় হন আগরতলায়।
রাজধানীর আস্তাবল ময়দান থেকে শুরু হয় মিছিল। দলের জেনারেল সেক্রেটারি অঘোর দেববর্মা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট হারাধন দেববর্মা জানান, ত্রিপুরার স্বশাসিত জেলা পরিষদকে কেন্দ্র করে আলাদা রাজ্য গঠনের দাবি জানাচ্ছেন তারা। সংবিধানের ২ নম্বর ধারা মোতাবেক তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আলাদা রাজ্য গঠন করার দাবি জানাচ্ছে। ত্রিপুরাকে ভেঙে যতদিন পর্যন্ত আলাদা ‘তিপরা ল্যান্ড’ না হচ্ছে তত দিন পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
মিছিল শেষে আস্তাবল ময়দানের সমাবেশে এন সি দেববর্মা জানান, এ রাজ্যের উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ দীর্ঘ দিন ধরেই বঞ্চিত। আর্থিক, রাজনৈতিক, সামাজিক দিক থেকে শোষণের শিকার। তাদের এই পিছিয়ে পড়া থেকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র আলাদা রাজ্য গঠন।
তবে তিনি স্পষ্ট করে দেন, আলাদা রাজ্য গঠনের দাবি জানালেও তারা এ দাবি নিয়ে কোনো হিংসাত্মক আন্দোলনে যেতে চান না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ত্রিপুরাকে ভেঙে আলাদা রাজ্য গঠন করতে চান তারা।
বাংলাদশে সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৩
টিসি/এএ/এসআরএস