ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে সিরিয়া সরকারকে দুষলেন কেরি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৩
রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে সিরিয়া সরকারকে দুষলেন কেরি

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি আসাদ বাহিনীর দিকেই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগের তীর তাক করলেন। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী সিদ্ধান্তের বিষয়েও ইঙ্গিত দিলেন তিনি।

সোমবার এক জোরালো বক্তব্যে কেরি বলেন, ‘গত বুধবার রাসায়নিক অস্ত্র হামলায় কয়েকশ মানুষ নিহত হয়েছে, এটা মেনে নিতেই হবে। আর এজন্য সিরিয়ার সরকার দায়ী। ’

সিরিয়ার একটি হামলাস্থলে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল পর্যবেক্ষণের সময় গুলিবর্ষণের শিকার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই কেরি এ বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, ‘এ হামলার অর্থ সিরিয়া এখন সংঘাতের মধ্যে জড়িয়ে পড়েছে। এ সংঘাত ইতিমধ্যেই অনেক ক্ষতির সৃষ্টি করেছে। আর এভাবে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত এই সভ্য বিশ্ব অনেক আগেই নিয়েছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘সিরিয়ার সরকার রাসায়নিক অস্ত্র হামলার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।   পরিস্থিতির এমন টলায়মান অবস্থায় যে কেউ এমন দাবি করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে তাদের বিবেক ও নীতিবোধকে কাজে লাগানো উচিত। ’

কেরি বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমাদের নীতিবোধ কাপুরুষের মতো এভাবে অপরাধ করা ও সেটাকে আবার অস্বীকার করাকে বাধা দেয়, প্রতিহত করে। সিরিয়ান সরকার তার প্রতিটি পদক্ষেপেই জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ দলকে সহযোহিতা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ’

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সিরিয়ার বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাতে পারে। কিন্তু এজন্য তাকে প্রথমে কংগ্রেসকে জানাতে হবে। এজন্য উভয়পক্ষই কাজ শুরু করেছে।

এজন্য প্রশাসনিক কর্তারা কংগ্রেস সদস্যদের সাথে পরামর্শ করছেন। আমরা আগামী দিনেও এ আলোচনা চালিয়ে যাব। কেরি তার বক্তব্যে এ কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাংসদীয় স্পিকার জন বোয়েনারের মুখপাত্র ব্রেন্ডান বাক জানিয়েছেন, সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি ও এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য করণীয় সম্পর্কে হোয়াইট হাউসের সাথে  বোয়েনারের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।

কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কংগ্রেস সদস্যদের সাথে যেনো পরামর্শ করা হয় এবং এ ব্যাপারে যেনো নিশ্চিত উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয় কৌশল অবলম্বন করা হয় বোয়েনার সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন।

ওবামা সিরিয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র যে একটা অবস্থান নেবে কেরির মন্তব্যে তার পরিস্কার ইঙ্গিত ছিল।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভূ-মধ্য সাগরে সিরিয়া উপকূলের কাছে চতুর্থ ক্রুজ-মিসাইলবাহী যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েনসহ শক্তি বৃদ্ধি করা নিয়ে বিশ্বজুড়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল।

এর আগে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সিরীয় সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানো হবে- পশ্চিমা দেশগুলোর এ ধরনের হুমকির জবাবে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সোমবার এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই লাভরভ বলেছিলেন, ‘এ ধরনের হামলা সিরিয়ায় ইরাকের পরিণতিকেই ডেকে আনবে। ’

তিনি অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি না করতে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারী কোনো অভিযানে সম্মতি না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক অভিযানের হুমকির জবাবে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল সিরিয়া সরকার।

রোববার এক বিবৃতিতে সিরিয়ার তথ্যমন্ত্রী ওমরান জাওয়াবি বলেছিলেন, সিরিয়ায় সামরিক অভিযান কারও জন্য আনন্দদায়ক হবে না। মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আগুনের ফুলকি হয়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে জ্বালিয়ে দেবে।

সিরিয়া সরকারের মতোই মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘন না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৩/আপডেটেড: ১৪১০ ঘণ্টা
কেএইচকিউ/বিএসকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।