ঢাকা: সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আসাদ বাহিনীর প্রতি কঠোর হুশিঁয়ারি উচ্চারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
রপ্তানির সময় তুরস্কে গ্যাস মাস্কসহ, অস্ত্র ও গোলাবারুদের এক বিপুল মজুদ জব্দ করা হয়। মঙ্গলবার জাপানের দৈনিকটি এ তথ্য জানায়।
সানকেই শিমবান নামে জাপানের ওই দৈনিকটি যুক্তরাষ্ট্র সেনাসূত্র ও জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার বেনামী গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, মাস্ক ও অস্ত্রের চালানসহ এ বছরের শুরুতে আল এন তিসার নামে লিবিয়ার নিবন্ধিত একটি জাহাজ সিরিয়ার উদ্দেশ্যে উত্তর কোরিয়া ত্যাগ করে।
পত্রিকাটি প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী অন্যান্য দেশের সহায়তায় জাহাজটিকে অনুসরণ করেছিল। এ বছর ৩রা এপ্রিল তুরস্কের দারদানেলে অতিক্রম করার সময় তুরস্কের কর্তৃপক্ষ জাহাজটিতে অনুসন্ধান চালায়।
অনুসন্ধানে তুরস্কের কর্মকর্তারা ১৪’শ রাইফেল ও পিস্তল, ত্রিশ হাজার বুলেটসহ রাসায়নিক হামলার প্রতিরোধক গ্যাস মাস্ক জব্দ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে, জাহাজটি তুরস্কে এসব মাস্ক ও গোলাবারুদ নামিয়ে তারপর পাশের দেশ সিরিয়ায় আসাদ বাহিনীর কাছে পাঠাতো।
তুরস্কের কর্তৃপক্ষ জাহাজের ক্যাপ্টেনকে আটক করার পর স্বীকারোক্তি নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। স্বীকারোক্তিতে ক্যাপ্টেন বলেন, ‘জাহাজটি সিরিয়ার জন্য অস্ত্র বহন করছিল। এটি উত্তর কোরিয়া থেকে তার গন্তব্যের দিকে যাচ্ছিল। ’
যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশ সমূহের অনুমোদন সাপেক্ষে সিরিয়ায় অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রাক্কালে জাতিসংঘ উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এবার এ অস্ত্র চালানের সত্যতা নিশ্চিত হলে উত্তর কোরিয়াকে জাতিসংঘের অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে।
গত কয়েক বছর ধরে উত্তর কোরিয়া ও সিরিয়ার সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। দেশটির চলমান বর্তমান গৃহযুদ্ধের সময়ও এ সম্পর্কে ভাঙ্গন ধরেনি।
আরেকটি প্রতিবেদন অনুযায়ী ধারণা করা হয় উত্তর কোরিয়া সিরিয়ায় পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণে সহায়তা করেছিল। তবে ওই চুল্লিটি ২০০৭ সালে ইসরাইলের বোমাবর্ষণে ধ্বংস হয়ে যায়।
পশ্চিমা বিশ্ব গত ২১ আগস্ট দামেস্কে রাসায়নিক অস্ত্র হামলার জন্য আসাদ বাহিনীর ওপর দোষারোপ করছে।
যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করছে সিরিয়া সরকার গত সপ্তাহের রাসায়নিক অস্ত্র হামলার সব তথ্য-প্রমাণাদি মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। দেশটির বিদ্রোহীরা দাবি করেছে এ হামলায় নারী ও শিশুসহ ১৩’শ মানুষ নিহত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মেডিকেল দাতব্য সংস্থা মেডিসিনস সানস ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) জানায়, সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের ফলে ৩’শ ৫৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
এদিকে সোমবার দামেস্কের হামলাস্থল পর্যবেক্ষণকালে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল গুলিবর্ষণের শিকার হন।
সানকেই শিমবান জাপানের অন্যতম প্রভাবশালী জাতীয় পত্রিকা। এ পত্রিকাটির উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে এমন গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশের অতীত নজির রয়েছে। তাই মনে করা হচ্ছে, বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েই পত্রিকাটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৩
কেএইচকিউ/আরকে