ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মমতার দিদিগিরি

বাংলানিউজ পলিটিক্যাল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৩
মমতার দিদিগিরি

ঢাকা: দাদাগিরি তো কম দেখা হলো না। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের ওপর দাদাগিরির নজির রয়েছে ঢের।

কিন্তু এবার দিদির পাল্লায় পড়া গেছে বেশ। তার দিদিগিরির ঠেলায় পরিস্থিতি বেগতিক। বাংলাদেশ তো বটেই, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও খাবি খাচ্ছে দিদিগিরি সামলাতে।

বামফ্রন্টকে হটিয়ে পশ্চিমবঙ্গের গদিতে বছর কয়েক ধরে জেঁকে বসে থাকা মমতা কেন্দ্রকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন বহুবারই।

তার গোঁয়ার্তুমির কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি এখনো ঝুলে আছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভূমি বিনিময় চুক্তি না হওয়ার পেছনেও নাকি এই দিদিরই অদৃশ্য কলকাঠি!

তার গোঁর্য়াতুমি কারণেই নাকি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তিগুলো হচ্ছে না বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা।  

আইন বহির্ভূতভাবে আন্তর্জাতিক নদী তিস্তার পানি উজানে প্রত্যাহার করার পরও  দিদি বলছেন, বেশি পানি পাচ্ছে বাংলাদেশ। একইভাবে বলছেন, এমনিতেই সীমান্তে ভূমি বেশি পাচ্ছে বাংলাদেশ। তাদের কাছে আর ভূখণ্ড ছাড় নয়। পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আর সব চুক্তিও নাকি থেমে আছে মমতার কারিশমায়।    

বস্তুত দাদার রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে পশ্চিমবঙ্গের গদিতে জেঁকে বসেই পুরোদমে দিদিগিরি শুরু করেন মমতা ব্যাণার্জি। দল ও রাজ্য ছাড়িয়ে তার দিদিগিরির গিরিঙ্গি পৌছে যায় নয়াদিল্লিতেও। তাকে সামল‍াতে হিমশিম খেতে হয় কেন্দ্রকেও। এমনকি তার দিদিগিরির দাপটের হাওয়া এখন এই বাংলাদেশে এসেও ঝাঁকি দিচ্ছে।

দিদি গোঁ ধরে থাকায় দফায় দফায় পিছিয়ে যাওয়া স্থল সীমান্ত চুক্তি লোকসভার চলতি অধিবেশনেও উঠবে কি না তা নিয়ে সংশয় জেগেছে।

এদিকে তিন বছর পর ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) ৩৮তম বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল কর‍ার পেছনেও মমতার দিদিগিরি কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতের পক্ষে এ বৈঠক বাতিলের জন্য অভ্যন্তরীণ জটিলতাকে দায়ী করা হয়েছে বটে, তবে এর পেছনেও যে মমতার গোয়ার্তুমি কাজ করেছে তা অনেকটাই নিশ্চিত।
mamata-dede-01
তিস্তা চুক্তি এড়িয়ে চলার পেছনে মমতার যুক্তি হলো, এই চুক্তি হলে কম পানি পাবে তার প্রদেশ। তাই শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশকে ২৫ ভাগের বেশি পানি দিতে নারাজ দিদি।

যে কোন সিদ্ধান্তে এমন অনমনীয়ভাবে গোঁ ধরে থাকার অভ্যাসটা নাকি দিদির ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য।
 
তিনি চাইছেন চাপ তৈরি করে আপোষ।
 
তার দিদিগিরিতে এটা স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক নদী তিস্তাকে পশ্চিমবঙ্গের সম্পত্তি মনে করছেন তিনি। তাই নজিরবিহীনভাবে উজানে একতরফা পানি প্রত্যাহারের ন্যক্কারজনক নজির তৈরি গড়ছেন। নদীর মালিকসুলভ দম্ভেরই প্রকাশ ঘটছে মমতার দিদিগিরিতে।

তার গোয়ার্তুমিই ভারতকে চুক্তির পথ না মাড়াতে উৎসাহ জোগাচ্ছে। মমতা চাইছেন না বলে চুক্তি নিয়ে গড়িমসি শুরু করেছে কেন্দ্রও।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৩
জেডএম/এডিবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।