ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের সেবা খাতের কার্যক্রম বন্ধ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৩
যুক্তরাষ্ট্রের সেবা খাতের কার্যক্রম বন্ধ!

ঢাকা: অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত বিল পাস না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি সরকারি সেবা খাতের  কার্যক্রম বন্ধ হওয়া (শাটডাউন) শুরু হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি সমৃদ্ধ দেশটিতে গত ১৭ বছরের মধ্যে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটলো।



সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাত ১২ টার আগ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সেবা খাতগুলোতে অর্থ বরাদ্দ-সংক্রান্ত বিলটি পাস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টি ও প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের মতানৈক্যের কারণে বিলটি আলোর মুখ দেখেনি।

এই বিলটি পাস না হওয়ায় প্রায় সাড়ে সাত লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ১ অক্টোবর থেকে বেতন পাবেন না। এছাড়াও অচলাবস্থা নিরসনের পর বেতন ছাড় হবে কিনা তারও কোনো নিশ্চয়তা থাকছে না।

সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, অর্থবছর শেষ হওয়ায় সেবাখাতগুলোতে নতুন করে অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বিলটি পাস না হওয়ায় দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা), জাতীয় পার্ক, পরিবেশ সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাসহ বেশ কিছু সেবা সংস্থার অধিকাংশ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। অবশ্য সামরিক বাহিনী, পুলিশ প্রশাসন, অগ্নিনির্বাপণ কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থাগুলোর ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না।

সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, বিলটি পাস না হওয়ার কারণ, প্রেসিডেন্ট ওবামার স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত আইনটি। ‘ওবামাকেয়ার’ নামে পরিচিত বিলটি পাস না করতে অথবা এতে কোনো অর্থ বরাদ্দ না দিতে ওবামার প্রতি আহ্বান জানান রিপাবলিকানরা।

কিন্তু ওবামাকেয়ার পাসে ডেমোক্রেটরা অনড় থাকায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হলো। তবে, সোমবার রাত ১১টার দিকে অচলাবস্থা নিরসনে আলোচনার প্রস্তাব দেন রিপাবলিকানরা। জবাবে ডেমোক্রেটদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই প্রস্তাব অনেক দেরিতে আসলো।

মধ্যরাতের এই তুঘলকি কাণ্ডের পর সেবাখাতগুলোকে কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে হোয়াইট হাউজের বাজেট অফিস।

সেবাখাতগুলো বন্ধ হওয়ার প্রথম শিকার খোদ মার্কিন আইনসভার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকউন্টটিই। রাত ১২টার পর অ্যাকাউন্টটিতে একটি পোস্ট করে বলা হয়, ‘সরকারি অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় এই অ্যাকাউন্টটি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকম পরিচালনা করবে না। ’

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে এ নিয়ে হইচই পড়ে গেছে। বিরক্তি প্রকাশ করেছেন মার্কিন নাগরিকরা।

এ ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ওবামা তার ব্যক্তিগত টুইটার বার্তায় বলেছেন, তারা প্রকৃতই কাণ্ডটি ঘটালো। একটি সঠিক বাজেট পাস করতে না দিয়ে ওবামাকেয়ারের দোহাই দিয়ে রিপাবলিকানরা সরকারকে সেবাখাতগুলো বন্ধে বাধ্য করলো।

এদিকে, ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর হ্যারি রেইড জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে আলোচনা করতে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় সিনেটে বৈঠক হবে।

এর আগে ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু সেবা খাতের কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর ও ১৯৯৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের অজরুরি সরকারি কর্মকর্তাদের সাময়িক ছুটি প্রদান এবং অজরুরি সেবাগুলো স্থগিত রাখা হয়েছিল। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশসহ বিভিন্ন সেবাখাতে তহবিল বরাদ্দ নিয়ে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক ও বিরোধী রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যদের দ্বন্ধের কারণে এমনটি হয়েছিল। সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বিল ক্লিনটন।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা/আপডেটেড: ১২৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৩
এইচএ/এসএফআই/বিএসকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।