কলকাতা: দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন লালুপ্রসাদ যাদব। সিবিআই আদালতের এই রায়ই দিল্লির রাজনীতিতে হাজারো জল্পনা উস্কে দিচ্ছে।
লালু প্রসাদ যাদবের জেলযাত্রা প্রায় অনিবার্য। তারপর? বিহার তো বটেই, সে প্রশ্ন এখন জাতীয় রাজনীতির সর্বত্র। দুই বছরের বেশি সাজা হলেই লালুকে ছাড়তে হবে সাংসদ পদ। শুধু তাই নয়- আগামী পাঁচ বছর ভোটেও দাঁড়াতে পারবেন না তিনি। অর্থাত্ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন লালুকে ছাড়াই লড়তে হবে আরজেডিকে। আরজেডির হাল কে ধরবেন? যিনিই ধরুন লালু ক্যারিশমা কেউ আনতে পারবেন কি?
কিবা হবে জোট সমীকরণের? লালুর দল আরজেডি যে গুরুত্ব পেয়েছে জাতীয় রাজনীতি, লালুহীন আরজেডি কি সেই গুরুত্ব পাবে? আশা কম। কারণ, লালুর চির শত্রু নীতিশ। মোদী বিতর্কে সম্প্রতি এনডিএ ছেড়েছেন নীতিশ কুমার।
বসে নেই কংগ্রেসও। সঙ্গে সঙ্গে নীতিশকে নিজেদের জোটে টানতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কেন্দ্রীয় সাহায্যে নীতিশের হাত ভরাচ্ছেন মনমোহন। যতোই নীতিশের শক্তি বাড়ছে, ততোই গুরুত্ব হারাচ্ছে লালুর দল আরজেডি। শুধু লালুর মতো বিশ্বস্ত সঙ্গীই নয় কংগ্রেসের জোট ভেঙেছে মমতার সঙ্গেও।
লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই ভাঙন আর জোড়া লাগবে কিনা তা নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন সেই বিতর্কে নতুন ইন্ধন জুগিয়েছেন দশ জনপথের কাছের লোক জয়রাম রমেশ। তার অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি গোপনে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন।
নীতিশের মতোই নবীনকেও কাছে টানতে মরিয়া কংগ্রেস। তাই উড়িষ্যার ক্ষেত্রেও বিহারের মতোই দরাজ মনমোহন সরকার। কিন্তু মনমোহনের প্যাকেজ নিয়ে শেষ পর্যন্ত নীতিশ-নবীন সোনিয়া শিবিরেই থেকে যাবেন এমনটি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউই।
আঞ্চলিক নেতাদের এই দোলাচলই এখন বিজেপির শক্তি। জোট প্রশ্নে সোনিয়ার ঠিক উল্টো কৌশল নিয়েছেন মোদীরা। কংগ্রেসের আগেই দেশজুড়ে প্রচারে নেমে ভোটের হাওয়া তুলতে শুরু করেছেন গুজরাট প্রধান। বিজেপির থিঙ্কট্যাঙ্ক মনে করছে দলের সংসদ সদস্য সংখ্যা সরকার গড়ার জায়গায় নিয়ে যেতে পারলে নবীন-নীতিশদের জয় করা কঠিন হবে না। তাই বিজেপির স্ট্যাটেজি আগে ভোট পরে জোট।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৩
এএসআর/আরকে