ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

শান্তিতে নোবেল জয় ওপিসিডব্লিউ’র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৩
শান্তিতে নোবেল জয় ওপিসিডব্লিউ’র

ঢাকা: শান্তিতে নোবেল পেল অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রহিবিশন অব কেমিকেল ওয়েপন্স (ওপিসিডব্লিউ)। সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে তদারকির জন্য আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র পর্যবেক্ষক এ প্রতিষ্ঠানটিকে নোবেল দেওয়া হয়েছে।



নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির ঘোষণাপত্রে জানানো হয়েছে, রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে ব্যাপক চেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রহিবিশন অব কেমিকেল ওয়েপন্সকে (ওপিসিডব্লিউ) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সময় ৩ টায় অসলোয় শান্তিতে নোবেল জয়ীর নাম ঘোষণা করে। এর প্রায় আধা ঘণ্টা আগে নরওয়ের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম, ২০১৩ সালের শান্তিতে নোবেলজয়ী হিসেবে ওপিসিডব্লিউর নাম প্রকাশ করে।

বিশ্ববাসী ও মিডিয়াগুলোর ধারণা ছিল, পাকিস্তানি নারীশিক্ষা কর্মী মালালা ইউসুফজাই এ বছরের শান্তিতে নোবেল জয় করবেন। মালালা না পেলে কঙ্গোর চিকিৎসক ডেনিস মুখওয়েগের হাতে যাবে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি। পুরস্কার ঘোষণার আগ মুহূর্তেও এমনটিও ধারণা ছিল সবার।

কিন্তু অতীতের পুনরাবৃত্তি করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। বিশ্ববাসী তালিকায়  যাদের এগিয়ে রেখেছিলেন তাদের মুখে কখনই হাসি ফুটায় নি নোবেল কমিটি। বর্তমান কমিটিও এর ব্যতিক্রম করেনি।

ওপিসিডব্লিউ’র তত্ত্বাবধানে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি সিরিয়ার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় সংস্থাটি। সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসে রাজি হওয়া দেশটি পশ্চিমা হামলা থেকে বেঁচে যায়।

জাতিসংঘের সহায়তায় ৬ অক্টোবর থেকে সিরিয়ায় সীমিত পরিসরে রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস শুরু করেছে সংস্থাটি। দেশটিতে আগামী ১ নভেম্বর থেকে পুরোদমে রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস চালাবে ওপিসিডব্লিউ। সিরিয়ায় পশ্চিমা আগ্রাসন এড়াতে রাশিয়ার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস চালানো হচ্ছে।

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার হয়ে আসছে।   ১৯২৫ সালের জেনেভা কনভেনশনে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল কিন্তু উৎপাদন, মজুদের ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারও ব্যবহার করেছিল এ মরণাস্ত্র। এরপর থেকে রাষ্ট্র ও সন্ত্রাসীরা ব্যবহার চালিয়েছে প্রাণনাশকারী এ অস্ত্রের। যুদ্ধসহ কোনো পরিস্থিতিতে যেন রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা না হয় সেজন্য  ১৯৯২-৯৩ সালে এ সংক্রান্ত একটি কনভেনশন হয়। ওই কনভেনশনে রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন ও মজুদকে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে কার্যকর হয় কেমিকেল ওয়েপন্স কনভেনশন।

১৯৯৭ সালের ২৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওপিসিডব্লিউ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহাররোধ ও ধ্বংসে কাজ করে যাচ্ছে। বতর্মানে ওপিসিডব্লিউর সদস্য সংখ্যা ১৮৯। ৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর এ প্রতিষ্ঠানটির বাৎসরিক ব্যয় ৭ কোটি ৪০ লাখ ইউরো। নেদারল্যান্ডসের হেগে ওপিসিডব্লিউ’র সদর দফতর অবস্থিত।

ওপিসিডব্লিউ জাতিসংঘের কোনো অঙ্গ বা সহযোগী সংস্থা নয়। তবে নীতি নির্ধারণ ও প্রয়োগে একে অপরকে সহযোগিতা করে।

নোবেল পুরস্কারের প্রবর্তক সুইডিস শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকী ১০ ডিসেম্বর ওপিসিডব্লিউকে দেওয়া হবে পুরস্কারের ১২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার ও সনদপত্র।

১৮৯৫ সালে আলফ্রেড নোবেলের উইলমতে, এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। ১৯০১ সালে প্রথম নোবেল জয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। শুরু থেকে পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য ও শান্তি দেওয়া হয় নোবেল পুরস্কার। সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থসহায়তায় ১৯৬৮ সাল থেকে অর্থনীতিতে নোবেল দেওয়া শুরু হয়।

পদার্থ, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য ও অর্থনীতিতে পুরস্কার সুইডেন থেকে দেওয়া হলেও শান্তিতে নোবেল দেয় নরওয়ে।

২০১২ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ছয় দশক ধরে ইউরোপে শান্তি ও সংহতি সুসংহত করা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য সংগঠনটিকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা/আপডেটেড: ১৫০২ ঘণ্টা/সর্বশেষ আপডেট ১৬১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৩
এসএফআই/জেডএস/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।