নিউইয়র্ক: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, পোশাক শিল্পের প্রকৃত মজুরি আগের চেয়ে হ্রাস পাওয়ায় শ্রমিকদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। অর্থনীতিতে তাদের মূল্যবান অবদানও স্বীকৃত হচ্ছে না।
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) এবং প্রোগ্রেসিভ ফোরাম, নিউইয়র্ক এর যৌথ আয়োজনে বাংলাদেশে পোশাক শিল্প ও খুলনার রামপালে নির্মীয়মাণ ‘বিতর্কিত ’তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি পণ্যের উপর শুল্ক হ্রাসের মাধ্যমেও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে।
পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শ্রমিকদের মজুরি ন্যায়সংগত পর্যায়ে উন্নীত করা দরকার। মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মজুরি বৃদ্ধি নিশ্চিত করা দরকার।
তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে শ্রম- ঘূর্ণায়নের মাত্রা উঁচু। অর্থাৎ শ্রমিকেরা সামান্য মজুরি বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখলেই অন্যত্র কাজ নিচ্ছে। সে কারণে মালিকেরা আবার শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য দিকে বিনিয়োগ করছে না। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি শ্রম- ঘূর্ণায়ন হ্রাস করবে বলে মত দেন এই অর্থনীতিবিদ।
বেনের বিশ্ব সমন্বয়কারী ডঃ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন প্রোগ্রেসিভ ফোরাম, নিউইয়র্কের সভাপতি খোরশেদুল ইসলাম এবং সভা পরিচালনা করেন বেনের নিউইয়র্ক, নিউজার্সি এবং কানেক্টিকা রাজ্য শাখার সমন্বয়কারী সৈয়দ ফজলুর রহমান ।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সম্পর্কে অধ্যাপক সোবহান তার গবেষণা প্রতিবেদনে বলেন, (ক) সুশাসনের ব্যর্থতা; (খ) রাজনৈতিক পরিবেশের ব্যর্থতা (গ) সমাজের মধ্যে অন্যায় এবং অবিচারের উপস্থিতি (ঘ) বিশ্বায়নসঞ্জাত প্রতিযোগিতার প্রবল চাপ এবং (ঙ) অন্যায্য বিশ্ব অর্থনীতি ব্যবস্থা।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আদনান সৈয়দ, প্রকৌশলী ইমদাদুল ইসলাম, শামসাদ হুসাম, কবীর আনোয়ার প্রমুখ।
সভার দ্বিতীয় পর্বে খুলনার রামপালে নির্মীয়মাণ ‘বিতর্কিত ’তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র সম্পর্কে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
ডঃ নজরুল ইসলাম এই আলোচনার সূত্রপাত করেন। তিনি সুন্দরবনের উপর এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাবের তালিকা তুলে ধরেন এবং পাশাপাশি এসব অভিযোগের উত্তরে সরকারের বক্তব্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৩
কেএইচ/এমজেডআর