ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

হাইয়ানের তাণ্ডবে ফিলিপাইনে ১০ হাজার মানুষের প্রাণহানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৩
হাইয়ানের তাণ্ডবে ফিলিপাইনে ১০ হাজার মানুষের প্রাণহানি

ঢাকা: প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ ফিলিপাইনে গত শুক্রবার ভোরে আঘাত হানা শক্তিশালী টাইফুন হাইয়ানের আঘাতে ১০ হাজার মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।

রোববার সকালে তাকলোবান শহরের এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম জানান, আমরা প্রদেশটির গর্ভনরের সঙ্গে গত রাতে ঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছি।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ঝড়ে ১০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।

টাইফুন হাইয়ানের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে লিতি প্রদেশের তাকলোবান শহর।

এর আগে হাইয়ানের আঘাতে প্রায় ১২শ’ মানুষ মারা গেছে বলে জানিয়েছিল দেশটির রেডক্রস।

তবে, পাঁচ নম্বর ক্যাটাগরির টাইফুনটি স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ৫টায় (গ্রিনিচমান সময় বৃহস্পতিবার ২১টায়) ২৭৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানার পর শনিবার সকালে দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, টাইফুনের তাণ্ডবে প্রায় ১২০ জন নিহত হয়েছে।

তবে, স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ফিলিপাইনে কর্মরত রেডক্রসের কর্মকর্তারা এক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, টাইফুনের আঘাতে ১২শ’ মানুষ নিহত হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তবে এ সংখ্যা আরও কয়েকদিন পর সঠিকভাবে নির্ণয় করা যাবে বলে জানান তারা।

দেশটিতে নিযুক্ত রেডক্রসের সেক্রেটারি জেনারেল গুবেনডলিন প্যাং বলেন, আমরা অনুমান করছি টাইফুনের আঘাতে ট্যাকলোব্যান প্রদেশে ১০০০ ও সামার প্রদেশে অন্তত ২০০ লোক মারা গেছে।

দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, স্থানীয় সময় ভোরে টাইফুন হাইয়ান সর্বপ্রথম আঘাত হানে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ সামারে।

টাইফুনের আঘাতে তাকলোবান শহরের রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে থাকার কথা জানিয়েছেন দেশটির বেসামরিক বিমান পরিচালনা কর্তৃপক্ষের সহকারি পরিচালক ক্যাপ্টেন জন অ্যান্ড্রুস।

প্রচন্ড বেগে আঘাত হানা টাইফুনটি বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত করেছে, ঘটেছে ভূমিধস। বিদ্যুত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েদার আন্ডারগ্রাউন্ডের পরিচালক ও হারিকেন বিশেষজ্ঞ জেফ মাস্টার্স বলেছেন, সম্ভবত ঘণ্টায় ১৯৫ মাইল বেগে সুপার টাইফুন আঘাত হেনেছে। আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে রেকর্ড করেছে এটি।

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর যৌথ টাইফুন সতর্কতা কেন্দ্র হাইয়ান আঘাত হানার কিছুক্ষণ আগে জানিয়েছিল, ঘণ্টায় ৩১৪ কিলোমিটার গতিতে ঝড়ো যাওয়া বয়ে যাওয়ার সঙ্গে ৩৭৯ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে।

ঝড় মোকাবেলায় আঘাত হানার আগে যুদ্ধের প্রস্তুতির মতো প্রস্তুতি নেওয়ার ঘোষণা দেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো।

টেলিভিশনে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি একতাবদ্ধ থাকি তাহলে কোনো টাইফুনই ফিলিপিনোদের ছুরি নিয়ে যেতে পারবে না। ’

উদ্ধার তৎপরতার জন্য প্রস্তুতি রাখা হয় বিমানবাহিনীর তিনটি বিমান, ৩২টি হেলিকপ্টার এবং ২০টি জাহাজ।

এর আগে, ২০১১ সালে ভয়াবহ এক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। গত মাসে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.১। চলতি বছর ২৪তম টাইফুন হিসেবে দেশটিতে আঘাত হানল হাইয়ান।

প্রতিবছর ফিলিপাইনে গড়ে ২০টি করে টাইফুন আঘাত হানে। ২০১১ সালে টাইফুন ওয়াশির আঘাতে কমপক্ষে ১ হাজার ২শ জন নিহত এবং ৩ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়। ঝড়ে ১০ হাজারের বেশি ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। আর গত মাসের ভূমিকম্পে ২ শতাধিক লোক মারা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৩
জেডএস/বিএসকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।