ঢাকা: গত ৭ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের মতো কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় ফের মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। তবে শনিবারের পর রোববারই এ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, গত ৭ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে পুলিশ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ ৪৫ শতাংশ ভোট পেয়ে যেমন সরকার গঠন করতে পারেননি, শনিবারের ফলাফলেও দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ৪৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ ভোট লাভে সমর্থ হলেও সাংবিধানিকভাবে ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে হবে তাকে।
শনিবারের নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায়, ডেমোক্রেটিক পার্টির (ডিপিএম) প্রার্থী নাশিদের সঙ্গে ক্ষমতাগ্রহণের এ লড়াইয়ে থাকা প্রগ্রেসিভ পার্টি অব মালদ্বীপের (পিপিএম) প্রার্থী ও সাবেক স্বৈরশাসক মামুন আবদুল গাইয়ুমের সৎ ভাই ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম পেয়েছেন ২৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ ভোট আর জমহুরি পার্টির প্রার্থী ও শিল্পপতি কাসিম ইব্রাহীম পেয়েছেন ২৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ ভোট।
এদিকে, ১১ নভেম্বরের আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাধ্যবাধকতা থাকার পরও রোববার দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ হাইকোর্টে স্থগিত হওয়ায় নতুন করে সঙ্কট দেখা দিল ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপপুঞ্জ বেষ্টিত রাষ্ট্রটিতে।
সরকার রোববারের ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে কোনো সহযোগিতা করছে না বিধায় এদিন নির্বাচন সম্পন্ন করতে দেশটির নির্বাচন কমিশন প্রধান ফুয়াদ তৌফিক অস্বীকৃতি জানানোর পর নির্বাচন শুরু হওয়ার কয়েকঘণ্টা আগে অর্থাৎ শনিবার মধ্যরাতে সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, শিল্পপতি কাসেম ইব্রাহীম নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটগ্রহণের জন্য আরও বেশি সময় চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করার পর এ নির্দেশ জারি করা হলো।
বর্তমান প্রেসিডেন্টকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের অনুমতি দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনামায় বলা হয়, রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে এই মর্মে জানানো হচ্ছে যে, রোববারের নির্বাচন হবে না।
এদিকে, দফায় দফায় ভোটগ্রহণ স্থগিত ও নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে দেরি হওয়ায় দেশটির কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ জোটভুক্ত রাষ্ট্রগুলো।
এর আগে, গত ৭ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনেও কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট লাভ করতে না পারায় দ্বিতীয় দফা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সাংবিধানিকভাবে ১১ নভেম্বরের আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার তাড়া থাকলেও প্রার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফা নির্বাচন সম্পন্ন করতেও একাধিকার বার (২৮ সেপ্টেম্বর ও ১৯ অক্টোবর) তারিখ পরিবর্তন করতে হয় নির্বাচন কমিশনকে। শেষ পর্যন্ত শনিবারই নির্বাচন সম্পন্ন হয়।
উল্লেখ্য, মামুন আবদুল গাইয়ুমের দীর্ঘ ৩০ বছরের শাসন শেষে ২০০৮ সালের প্রথম নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন মোহাম্মদ নাশিদ। কিন্তু ২০১২ সালে এক পুলিশ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি। তারপর বেশ কিছুদিন ধরে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয় পর্যটনের জন্য প্রসিদ্ধ এই দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে।
সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, রোববার নির্বাচন স্থগিত করে মোহাম্মদ ওয়াহিদকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান পদে দায়িত্ব পালনের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টে আদেশ জারি হওয়ায় সঙ্কট ঘনীভূতই হলো মালদ্বীপে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৩
এইচএ/বিএসকে