ঢাকা: সেনাঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগেই পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করা হয় মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে। তারপর জোরপূর্বক ক্ষমতা গ্রহণ করতে রিপাবলিকান গার্ড দিয়ে অপহরণ করিয়ে তাকে নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে বন্দি করা হয়।
আলেক্সান্দ্রিয়ার কারাগারে বন্দি দেশটির ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপ্রধানের দেওয়া একটি চিঠি বুধবার টেলিভিশনে পাঠ করে এমনটিই দাবি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ দামিতি।
মুরসিকে উৎখাত করে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি নতুন নির্বাচন ঘোষণা দেওয়ার পর সম্প্রতি দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন রহস্য উন্মোচনের মধ্যেই এ কথা জানালেন ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের আইনজীবী দামিতি।
প্রথম বারের মতো মুরসি সরাসরি সেনাঅভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে দাবি করেন, আলটিমেটাম দিলেও সংলাপে বসার কোনো সুযোগ না দিয়ে সেই সময় শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগেই ২ জুলাই তাকে আটক করা হয় এবং একদিন পর কেবলই আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাচ্যুতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
মুরসি তার চিঠিতে দাবি করেন, সম্মানিত মিশরীয়দের এটা জানানো উচিত যে, আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই ২ জুলাই থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত আমাকে জোরপূর্বক অপহরণ করা হয় এবং রিপাবলিকান গার্ড দপ্তরে বন্দি রাখা হয়। এরপর আমাকে ও আমার উপদেষ্টাদের নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে জোরপূর্বক দীর্ঘ চার মাস বন্দি রাখা হয়।
মুরসি আরও বলেন, সেনাঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে যা ঘটেছে তার ক্ষত কখনোই কাটিয়ে ওঠা যাবে না, যতক্ষণ না আবার গণতন্ত্র ফিরে আসে... এবং যারা দেশের মাটিতে রক্তের বন্যা বইয়েছে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা না হয়।
সাবেক প্রেসিডেন্ট তার চিঠিতে বলেন, আমি মিশরীয়দের সম্মান জানাই, যারা এই সেনাঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। এই সেনাঅভ্যুত্থান অধিকার ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী মিশরীয় জনগণের পাল্টা অভ্যুত্থানেই ব্যর্থতায় পর্যবেসিত হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই সেনাঅভ্যুত্থানে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ৪ নভেম্বর সাবেক প্রেসিডেন্টসহ ব্রাদারহুডের শীর্ষস্থানীয় ১৪ নেতাকে কায়রোর পুলিশ একাডেমির ভেতরে স্থাপিত বিশেষ আদালতে হাজির করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে বিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যা ও সহিংসতায় উস্কানির অভিযোগ আনা হয়। তবে, বিচার ও সেনাঅভ্যুত্থান অবৈধ বলে এজলাসকক্ষেই চিৎকার-চেঁচামেচি করায় আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত মুরসিসহ ব্রাদারহুড নেতাদের বিচারকার্য স্থগিত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৩
এইচএ/আরআইএস