ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

চিঠিতে অপরাধ স্বীকার, শনিবার গ্রেফতার হতে পারেন তেজপাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৩
চিঠিতে অপরাধ স্বীকার, শনিবার গ্রেফতার হতে পারেন তেজপাল

ঢাকা: ধর্ষণ মামলায় শনিবারই গ্রেফতার হতে পারেন ভারতের প্রভাবশালী সংবাদ সাময়িকী তেহেলকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তরুণ তেজপাল। শুক্রবার গোয়া পুলিশের দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার করা হতে পারে তাকে।



এদিকে,  যৌন নির্যাতনের শিকার ওই নারী সহকর্মীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে গত ১৯ নভেম্বর তেজপালের পাঠানো একটি চিঠি হাতে পেয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।

চিঠিতে তেজপাল নিজেই ওই নারী সহকর্মীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুইবার জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করছে সংবাদ মাধ্যমগুলো।

ওই নারী সহকর্মীকে লেখা চিঠিতে তেজপাল বলেছেন, ‘... অনেক দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের মধ্যে গড়ে ওঠা বিশ্বাস ও সম্মানের সম্পর্কটি আমি নষ্ট করে ফেলেছি...গত ৭ ও ৮ নভেম্বর দু’টি অনুষ্ঠানে তোমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোয় আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। ’

এর আগেই অবশ্য, তেজপালের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তেহেলকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সোমা চৌধুরীর কাছে ইমেইল বার্তায় জানিয়ে দেন ওই নারী সাংবাদিক।

এই ঘটনা তদন্তের জন্য আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করে তেহেলকা কর্তৃপক্ষ। তবে এরই মধ্যে ফাঁস হয়ে যায় কেলেঙ্কারি।

‘শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর’ কথা উল্লেখ করায় ওই নারী সহকর্মী ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সোমা চৌধুরীর কাছে ইমেইল বার্তায় দাবি করেছেন, ‘শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর কথা বলে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন তেজপাল। তিনি দু’টি অনুষ্ঠানে দুইবার আমার ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন...। ’

সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার গোয়া পুলিশ দিল্লিতে পৌঁছালে আটক হতে পারেন তেজপাল। জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সোমা চৌধুরীকেও।

এর আগে, নারী সহকর্মীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শুক্রবার একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে পুলিশ।

এদিন গোয়ার রাজধানী পানাজিতে পুলিশের মহাপরিচালক কিষাণ কুমার জানান, তেজপালের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইন তার নিজস্ব কাজ চালিয়ে যাবে।

গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পাড়িকর জানান, এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সহনশীলতা দেখাবে না সরকার এবং এমন জঘন্য অপরাধের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।

তিনি সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিকে জানান, তাদের (পুলিশ) উচিত একজন অপরাধীর (তেজপাল) সঙ্গে অপরাধীর মতোই আচরণ করা।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে তেজপালের।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, তেজপালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠায় ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সমর্থিত গোয়া সরকার বিজেপির সাবেক প্রধান ও কেন্দ্রীয় সরকারের সাবেক রেলমন্ত্রী বঙ্গারু লক্ষণের কারাদণ্ড প্রাপ্তির প্রতিশোধ নেওয়ারই সুযোগ পেল।

তেজপালের তেহেলকা পত্রিকায় বঙ্গারু লক্ষণকে জড়িয়ে অবৈধ অস্ত্র লেনদেন সংক্রান্ত একটি দুর্নীতি বিষয়ক প্রতিবেদন ছাপা হলে বিজেপির ভিত নড়ে ওঠে। ওই ঘটনার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে বর্তমানে কারাভোগ করছেন ২০০০ থেকে ২০০১ পর্যন্ত বিজেপি প্রধানের দায়িত্ব পালন করা বঙ্গারু লক্ষণ।

অবশ্য, শুক্রবার তেজপাল নিজেই এক বিবৃতিতে জানান, এই জঘন্য অভিযোগের তদন্তে সবরকমের সহযোগিতা করবেন তিনি।

অবশ্য অভিযোগ ওঠার পরই ছয় মাসের জন্য পদত্যাগ করেছেন তেহেলকা সম্পাদক।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৩
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।