ঢাকা: ‘শর্ত’ জুড়ে দিয়ে মিশরে সবধরনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে দেশটির সেনাসমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকার। এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
রোববার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আদলি মনসুর স্বাক্ষরিত নতুন এ আইন অনুসারে এবার থেকে পুলিশের অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের প্রতিবাদ মিছিল বা বিক্ষোভ সমাবেশ করা যাবে না।
অনেকেই মনে করছেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ও তার দল মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকদের আন্দোলন দমাতেই এই আইন প্রণয়ন করেছে সরকার।
জনবিক্ষোভ আতঙ্ক থেকেই এ আইন প্রণয়ন করতে হয়েছে সেনাসমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারকে। কারণ, গত তিন বছরের মধ্যে দুই জন প্রেসিডেন্টকে বিদায় নিতে হয়েছে।
এই আইন প্রণয়নের কারণে এখন থেকে মিশরের রাস্তায় কোনো ধরনের প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ মিছিল বের করা অথবা সভা-সমাবেশ করা বেশ কঠিনই হবে দেশটির নাগরিকদের জন্য।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিবাদ সমাবেশ বা বিক্ষোভ করতে হলে পুলিশ বা প্রশাসনকে অন্তত তিন কর্মদিবসের আগে জানাতে হবে এবং বিক্ষোভকারীদের নাম, ঠিকানা ও বিক্ষোভের কারণ উল্লেখ করতে হবে।
আবেদনের পর যদি পুলিশ মনে করে এই বিক্ষোভ মিছিল বা সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হলে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হবে তবে সেটা স্থগিত অথবা নিষিদ্ধ করে দিতে পারে। আর যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তবে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, শর্ট গানের শেল ব্যবহার করতে পারবে।
যারা আইন লঙ্ঘন করে বিক্ষোভ করবে তাদের সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
আইনটি প্রেসিডেন্ট কর্তৃক স্বাক্ষরিত হওয়ার পর রোববার মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ লোকজন ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
১৯টি মানবাধিকার সংগঠন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, এই আইন প্রণয়নের কারণে জনগণ আর তাদের অধিকারের দাবিতে রাস্তায় জড়ো হতে পারবে না। কোনো শান্তিপূর্ণ সমাবেশও করতে পারবে না। সরকার নিজেদের গায়ের জোরে জনগণের ওপর নির্যাতন চালাবে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হাজেম এল বেবলায়ি দাবি করেছেন, বিক্ষোভকারীদের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় স্বার্থেই এ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
এদিকে, আইনটি প্রণয়নের প্রতিবাদে রাজধানী কায়রো ছাড়াও দেশের অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ করেছে মুরসি সমর্থকরাও।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৩