আগরতলা (ত্রিপুরা): ২১ তম সংহতি মেলা উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্লোগান নিয়ে আসছে ৬ ডিসেম্বর বিলোনিয়ার চণ্দ্রপুর মসজিদে হতে যাচ্ছে এ মেলা।
মেলা উপলক্ষে প্রতি বছর সীমান্তের দু’পারের মানুষ জড়ো হন এখানে। পারস্পরিক কুশল বিনিময় করে মিলনের আবহে মেতে উঠেন দু’পারের জনগণ। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ভারত-বাংলাদেশের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন মেলায়।
১৯৯২ সালে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজনগর থেকে খানিক দূরে জঙ্গলের মধ্যে খোঁজ মেলে এক মসজিদের। সমতল থেকে প্রায় একশ মিটার উঁচুতে একটি টিলার উপর ভাঙ্গাচোরা অবস্থায় ছিল এর অবস্থান। এর পরের বছর থেকে অর্থাৎ ১৯৯৩ সাল থেকে মসজিদ প্রাঙ্গণে শুরু হয় সংহতি মেলা। হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের মেলবন্ধনকে সুদৃঢ় করার শপথ ঘোষিত হয় এ উৎসবে।
জঙ্গলের ভেতর খুঁজে পাওয়া এই মসজিদকে নিয়ে গল্পের অন্ত নেই। অনেকে বলেন এই মসজিদটি মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময়ের। আবার কারো মতে মসজিদটি তৈরি হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৭২৫ বছর আগে ৭০৩ হিজরিতে। এসব দাবির কোনোটিই মসজিদের নির্মাণকাল সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস নয়।
তবে মসজিদটি যে শতাব্দী প্রাচীন তা ভারত সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপেই বলা হয়েছে। পরে তাদেরকেই এটি অধিগ্রহণ ও সংরক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়।
১২টি স্তম্ভের উপর দাঁড়ানো মসজিটির বাইরের দিকের দৈর্ঘ্য ১৩ মিটার এবং প্রস্থ্য প্রায় ৬ মিটার। মসজিদের উপরের দিকে রয়েছে তিনটি গম্বুজ। মসজিদের পাশে একটি মাজার, একটি সভাকক্ষ ও একটি রসুইখানা রয়েছে। তবে এসবের অনেক কিছুই আজ ভগ্নপ্রায়।
মসজিদ সংস্কার করতে গিয়ে এক সময়ে খুঁজে পাওয়া যায় ৮টি রৌপ্য মূদ্রা। এগুলো ১৫০৮ থেকে ১৫৯৯ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ত্রিপুরার রাজবংশের সময়কার বলে ধারণা করা হয়।
বর্তমানে মসজিদটি সংস্কার করে চূড়ায় বসানো হয়েছে সাদা মার্বেল পাথর। মসজিদ চত্বরটি সাজিয়ে গুছিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে।
স্থানীয় বিধায়ক সুধন দাস জানান, মসজিদটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। তাই এর প্রাঙ্গণে প্রতিবছর সংহতি মেলার আয়োজন করা হয়। এবারও এর প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৩