ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বিক্ষোভে অচল হয়ে পড়ছে থাই সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৩
বিক্ষোভে অচল হয়ে পড়ছে থাই সরকার

ঢাকা: বুধবার চতুর্থ দিনের মতো সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে। বিক্ষোভকারীরা সরকারের সবগুলো মন্ত্রণালয় বন্ধ করে দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।

বিক্ষোভের মুখে পর্যটন, পরিবহন, কৃষি, অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বন্ধ হয়ে গেছে। বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে দপ্তর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন দেশটির শীর্ষ অপরাধীবিরোধী সংস্থার কর্মকর্তারা। এছাড়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মীদেরও দপ্তর ছাড়ার সময় বেধে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। লাগাতার বিক্ষোভের মুখে অচল হয়ে পড়ছে দেশটির সরকার।

সরকারের পতন ত্বরান্বিত করার দাবিতে বুধবার রাজধানীর বাইরে সরকারি কার্যালয়গুলোও ঘেরাও করার জন্য রওয়ানা হয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনজীবী সুথেপ থাউগসুবান। তিনি জানিয়েছেন, সরকার পতনের লক্ষ্যে ঘেরাও করে ১৪টি মন্ত্রণালয়ই বন্ধ করে দেবেন তারা। প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় জনগণের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, ইংলাক শিনাওয়াত্রার ওপর তার ভাই ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন শিনাওয়াত্রার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। থাকসিন চাইছেন ভাইকে দিয়ে নিজের অবৈধ শাসনের বৈধতা ফিরিয়ে নেবেন তিনি।

বিক্ষোভকারী দলের প্রধান সুথেপ থাউগসুবানের বিরুদ্ধে একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে পুলিশ। তবে পরোয়ানা সত্ত্বেও সুথেপকে গ্রেফতারের চেষ্টা করেনি পুলিশ।

এদিকে, পর্যটন মন্ত্রী সোমসাক পুরিস্রিসাক বলেছেন, আমাদেরকে (মন্ত্রণালয়) ছাড়তে হবে কেননা বিক্ষোভকারীরা সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবে।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা বলেছেন, যেহেতু বিক্ষোভকারীরা কোনো সহিংসতা দেখাচ্ছে না, সেহেতু সেনাবাহিনী ব্যবহারের কোনো ইচ্ছে নেই সরকারের। এছাড়া, পুলিশই বর্তমান পরিস্থিতি সামলাতে পারবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

এদিকে, বিরোধীদের আন্দোলনের জবাবে পাল্টা ইংলাক সিনাওয়াত্রা সরকারের পক্ষে ব্যাংককের রাজমঙ্গলা স্টেডিয়ামে জড়ো হয়েছে লাল শার্টধারী সরকারসমর্থকরা। তার‍া সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলছেন, ইংলাক সরকার নির্বাচিত সরকার। সরকারের পতনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতার জন্য এ ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

পদত্যাগের দাবি নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা বলেছেন, রাজনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য সবপক্ষের সমঝোতা আসা ও আলোচনা করা উচিত।

উল্লেখ্য, গত মাসে বিতর্কিত সাধারণ ক্ষমা বিল আনার পর থেকেই শুরু হয় সরকারবিরোধী আন্দোলন। বিলটি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে পাস হলেও বিক্ষোভকারীদের বিরোধের মুখে উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রত্যাখ্যাত হয়।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, ওই বিলের মাধ্যমে দুর্নীতির দায়ে জেলে না খেটেই থাইল্যান্ডে ফিরে আসবেন থাকসিন। ২০০৬ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর স্বেচ্ছায় নির্বাসনে রয়েছেন লাল শার্টধারীদের প্রাণের নেতা।

সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, ২০১০ সালে থাকসিনের লাল শার্টধারী সমর্থকরা ব্যাংকক অচল করে দেওয়ার পর এই প্রথম এমন বিক্ষোভ হচ্ছে থাইল্যান্ডে। সেবারের দুই মাসব্যাপী বিক্ষোভে অন্তত ৯০ জন বিক্ষোভকারী ও সাধারণ মানুষ নিহত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।