ঢাকা: পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর নতুন প্রধান হিসেবে মনোনীত হয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহিল শরিফ। প্রায় তিন দশকের মতো সেনাবাহিনী শাসিত পারমাণবিক শক্তিধর দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী পদটিতে লে. জে. রাহিলকে মনোনীত করার খবর বুধবার বিকেলে নিশ্চিত করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
দীর্ঘ প্রায় ৬ বছরের দায়িত্ব পালনের পর পাকিস্তানের ইতিহাসের নন্দিত সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক কায়ানির স্থলে রাহিলকে নিযুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হলো। এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি দেশটির ৬ লাখ সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্ব দিতে যাওয়া লে. জে. রাহিল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, ভারতের সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক, দেশজুড়ে জঙ্গিদের প্রাণঘাতী তাণ্ডব এবং আগামী বছর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহারের কারণে পাকিস্তানেও আল কায়েদা-তালেবানের হামলা বেড়ে যেতে পারে- এমন আশঙ্কা-উৎকণ্ঠার মধ্যেই এ গুরুদায়িত্ব পেলেন রাহিল।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, নতুন চিফ অব দ্য আর্মি স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন লে. জে. রাহিল। তার সঙ্গে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন লে. জে. রাশিদ মাহমুদ।
অন্যদিকে, লে. জে. রাহিলের দায়িত্বগ্রহণের মধ্য দিয়ে জেনারেল আশফাক কায়ানির দীর্ঘ ৬ বছরের নন্দিত সেনাপ্রধান দায়িত্বের ইতি ঘটছে। ২০০৭ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করা কায়ানি দেশটির গণতন্ত্রের ইতিহাসে চিরনন্দিত হয়ে অবিস্মরণীয় থাকবেন। সেনা অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানে জর্জরিত পাকিস্তানের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ না করায় তিনি রাজনীতিক এবং সাধারণ মানুষদের পক্ষ থেকে প্রশংসিত।
এছাড়া, গত মে মাসেই কায়ানির দায়িত্ব পালনকালে ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জন করে পাকিস্তান। কায়ানির নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো কোনো গণতান্ত্রিক সরকার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করার পর নির্বাচনের মাধ্যমে আরেকটি গণতান্ত্রিক সরকার শান্তিপূর্ণভাবেই ক্ষমতাগ্রহণ করে দেশটিতে।
শুধু এখানেই শেষ নয়, গত মাসেই নিজের অবসরের খবর জানতে পেরে আত্মবিশ্বাসী অথচ অবিচল কায়ানি দৃঢ় চিত্তে ঘোষণা করেন, সেনাবাহিনী চায় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং এ জন্য পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৩