ঢাকা: তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলের মানিসা প্রদেশের সোমায় কয়লা খনি বিস্ফোরণের ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এ দুর্ঘটনার দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
এছাড়া, দেশটির গত দুই দশকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ বিপর্যয়ের ঘটনায় শ্রমিক সংগঠনগুলো ধর্মঘটের ডাক দিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমগুলো।
মঙ্গলবারের এ খনি বিস্ফোরণের এখন পর্যন্ত ২৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া, আটকা পড়ে রয়েছে আরও বেশ কিছু শ্রমিক।
শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খনিসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো গণহারে বেসরকারিকরণের ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মস্থলের নিরাপত্তার মান মুখ থুবড়ে পড়েছে।
মঙ্গলবারের ঘটনা উল্লেখ করে শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বেশি লাভের জন্য আমাদের শ্রমিক ভাইদের বিপদসংকুল পরিবেশে কাজের জন্য পাঠানো হয়েছে।
খনি বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজধানী আঙ্কারার কিজিলে স্কয়ার, ইস্তাম্বুলের তাকসিম স্কয়ার ও সোমাসহ বেশ কিছু এলাকায় বুধবার বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। পরিস্থিতি সামলাতে জলকামান ও গ্যাস ছুঁড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
যদিও এ ঘটনার নিখুঁত তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তায়্যিপ এরগোদান। তথাপি ইস্তাম্বুলের রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছেন। এছাড়া, সোমার বিক্ষোভকারীরা এরদোগানকে ‘খুনি ও চোর’ বলে স্লোগান দেন।
তবে বর্তমান সময়ের এই বিপর্যয় সামলাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুল।
গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সময় সাড়ে ১২টায় বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে প্রাথমিকভাবে ১৭ জন শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এ সংখ্যা বেড়ে ২৮২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী টানের ইলদিজ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার সময় কয়লাখনিতে মোট ৭৮৭ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। বর্তমান মৃতের সংখ্যা ২৮২ জন।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, কয়লা খনিটি তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা থেকে ৪৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত।
জ্বালানিমন্ত্রী জানান, খনিতে আটকা পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে উদ্ধারকর্মীরা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি জানান, খনির ভেতরে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের সৃষ্টি হওয়ার কারণে শ্রমিকদের মৃত্যু হয়েছে। যারা আটকা পড়ে আছেন, পাম্প করে তাদের কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে দেশটির সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে ১৯৯২ সালে। এ সময় কৃষ্ণ সাগরের জঙ্গুলডাক খনি দুর্ঘটনায় ২৭০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৪