ঢাকা: দিল্লির শাসনভার গ্রহণ করতে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়ছেন নরেন্দ্র দামোদর মোদী। জানা গেছে বিকেলে রাজ্য বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে ভাষণ দেয়ার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করবেন তিনি।
এরপরের প্রশ্নটি হচ্ছে, মোদীর জায়গায় কে হবেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী।
জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বুধবারই রাজ্যের রাজস্ব মন্ত্রী আনন্দিবেন প্যাটেলের নাম ঘোষণা করা হবে। গান্ধীনগরে রাজ্য বিজেপির আইনপ্রণেতাদের বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত ঘোষণা আসবে।
বৃহস্পতিবারই গুজরাটের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন তিনি। সেখানে মোদী ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিং এবং এল কে আদভানির মত রথী মহারথীরাও।
তবে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আনন্দিবেনের পথ চলাটা মসৃণ নাও হতে পারে। মোদীর ছায়া তার ওপর থাকলেও রাজ্যের প্রভাবশালী বিজেপি নেতাদের একটি গ্রুপ তাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে দেখতে নারাজ। পাশাপাশি পেছনে থেকে বিজেপির কলকাঠি নাড়ায় যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংস্থা, (আরএসএস) তারাও আনন্দিবেনের ওপর খুব একটা ভরসা করতে পারছে না। সবচেয়ে বড় কথা উত্তরপ্রদেশ জয়ে মোদীর তুরুপের তাস অমিত শাহও নাকি আনন্দিবেনের মুখ্যমন্ত্রীত্বের বিরোধী।
আনন্দিবেন প্যাটেল ছাড়াও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আছেন বিজেপির গুজরাট রাজ্য সম্পাদক ভিখু দালসানিয়া। এছাড়া রাজ্যের অর্থমন্ত্রী নিতিন প্যাটেল এবং জ্বালানি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী সৌরভ প্যাটেলও নাকি মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। তবে আনন্দিবেন প্যাটেলই যে মোদীর প্রধান পছন্দ, তা গোপন নেই কারও কাছেই।
তাই অনেকেই আশঙ্কা করছেন আনন্দিবেনকে মুখ্যমন্ত্রী করাকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গুজরাটেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন মোদী। এমনকি বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দলের মোদীর একক কর্তৃত্বও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকেই।
তাছাড়া গুজরাট বিজেপি সম্পাদক ভিখুভাই দালসানিয়ার ওপর আছে আরএসএস এর সুনজর। আরএসএস ভিখুভাইকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে আগ্রহী।
আনন্দিবেন প্যাটেলকে মোদীর খুবই ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর এই ঘনিষ্ঠতা মোদীর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগ থেকেই। সেই গত শতাব্দীর ৯০ এর দশকে যখন রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বিবাদের জেরে মোদী রাজনীতিতে কোণঠাসা প্রায় সে সময় থেকেই তাকে সহযোগিতা করে গেছেন আনন্দিবেন।
প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য আনন্দিবেন প্যাটেল সুপরিচিত হলেও দলের তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্বই তার মূল সীমাবদ্ধতা বলে মনে করছেন অনেকেই।
অবশ্য ২০১২ সালের রাজ্য নির্বাচনে তিনি আহমেদাবাদের ঘাটলোদিয়া থেকে ১ লাখ দশ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের জন্য মোদী যখন পুরো ভারত চষে বেরিয়েছেন তখন রাজ্যের শাসন চালাতে সিনিয়র মন্ত্রীদের টিমের প্রধান করা হয়েছিলো আনন্দিবেনকে।
মূলত গুজরাটে বিজেপির দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময়ের শাসনামলে রাজ্যে মোদীর বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি হয়নি। তাই মোদীর পরে কে আসবেন তা নিয়ে রাজ্য বিজেপির অনেক নেতার মধ্যেই আছে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষ পর্যন্ত যে বিজেপির ঘাঁটি গুজরাটে গৃহদাহ সৃষ্টি করবে না তা নিশ্চিত করা বলা যাচ্ছে না।
** আজ পদত্যাগ করবেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী মোদী
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৩ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৪