আজ রাতে বৃষ্টি নামবে। উল্কা বৃষ্টি।
বৃষ্টি যদি নেমে বসে তাহলে রাতের আকাশে অন্তত ২০০ তারকার একসঙ্গে ছোটাছুটি চোখে পড়বে। ঘণ্টা খানেক স্থায়ী হবে এই উল্কা বৃষ্টি। অতি পুরাতন ধূমকেতু লিনিয়ারের লেজ থেকেই খসে পড়বে এই উল্কারাজি। ২০০৪ সালে ২০৯পি/লিনিয়ার নামের এই ধূমকেতু আবিষ্কার করেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
শুক্রবার দিবাগত শেষরাত কিংবা শনিবারের প্রথম ভাগে পৃথিবী এই ধূমকেতুর গতিপথের মধ্য দিয়ে চলে যাবে। এসময় লিনিয়ারের গায়ে হালকা ভাবে লেগে থাকা ধূলারাজি উল্কা হয়ে ঝড়ে পড়বে, ঠিক যেভাবে গা ঝাড়া দিলে কুকুরের গা থেকে ঝড়ে পরে লোম।
এর আগে শেষ যে বার পৃথিবী এমন ধূমকেতুকে নাড়া দিয়ে যায় তা ২০০ বছর আগের কথা। তবে এবারের মতো বড় ঝাঁকি তখন লাগেনি। উল্কাও ঝড়েনি অতটা, যতটা এবার ঘটতে যাচ্ছে বলেই ধারণা জ্যোতির্বিদদের।
উল্কাপতনের এই রাতে খোলা আকাশের নিচে যারা আলোকরাজির ছোটাছুটি দেখতে চান তাদের ঘরের বাইরে যেতে মানা নেই। আকাশের দিকে তাকিয়ে যে কেউ দেখতে পাবেন এই উল্কাবৃষ্টি।
একটি বিশেষ ধরনের উল্কাবৃষ্টি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে এবারই প্রথম। পেশাদার মহাকাশ গবেষকরা বিষয়টি গভীর মনোযোগে লক্ষ্য করার উদ্যোগ নিয়েছেন। যত বেশি সম্ভব তথ্য সংগ্রহেরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামায় নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারে উল্কা গুরু খ্যাত বিল কুক সে কথাই জানিয়েছেন।
লস অ্যালটোস হিলসের ফুটহিল কলেজের জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু ফ্রাকনোই বলেন, এটি বিজ্ঞানীদের জন্য সম্পূর্ণ অজানা একটি জগত।
ফ্রাকনোই জানালেন, ধূমকেতুর ওপর ৫ বিলিয়ন বছরের পুরোনো এই উল্কাগুলো ধূলিকণা, শষ্যদানা সর্বোচ্চ একটি মার্বেলের আকারের হতে পারে। পৃথিবীর আঘাতে এগুলো ঘণ্টায় ৩৬ হাজার মাইল বেগে নিচে পড়তে পারে। আর এই পতনের সময় সেগুলো আকাশ জুড়েই আলো ছড়াবে, বলেন বিল কুক।
উল্কাবৃষ্টি প্রথম হতে যাচ্ছে। কিন্তু জেনিসকেনসের কাছে নতুন কিছু নয়। ২০০৪ সালে লিনিয়ার ধূমকেতু আবিষ্কারের পরপরই তিনি বলেছিলেন ২০১৪ সালে পৃথিবীর আঘাতে এই ধূমকেতু উল্কাবৃষ্টি ঝড়াবে। এবার হয়তো তাই হতে চলেছে।
উত্তর আমেরিকার উপসাগরীয় এলাকায় মানুষ খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়েই দেখতে পাবে এই উল্কাবৃষ্টি। তবে যারা উপকূল এলাকা থেকে দেখবেন তারা হয়তো ধোঁয়াশার কারণে অতটা স্পষ্ট দেখতে পাবেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৪