ঢাকা: থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করলেন সেনাপ্রধান প্রায়ুথ চ্যান-ওচা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সংকট নিরসনে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটিতে মার্শাল ল’ (সামরিক আইন) জারির তিন দিনের মাথায় শুক্রবার এ ঘোষণা দিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্থায়ীভাবে কোনো ব্যক্তি দায়িত্ব না পাওয়া পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।
এছাড়া ১৫৫ প্রভাবশালী ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেনাবাহিনী। এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা ও তার পরিবারের সদস্যসহ ক্ষমাচ্যুত সরকারের বেশ কয়েকজন নেতা এবং আমলা রয়েছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার দেশটিতে মার্শাল ল’ (সামরিক আইন) জারি করে সেনাবাহিনী। তবে এ পদক্ষেপ ‘কোনো ধরনের অভ্যুত্থান নয়’ দাবি করে বলা হয়, ‘শান্তি ধরে রাখতে এবং আইনের শাসন অব্যাহত’ রাখতে এ আইন জারি করা হয়েছে।
এর পর গত বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব গ্রহণ করে সেনাবাহিনী। ওইদিনই অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত করফিউ চলাকালীন সময়ে জনগণকে বাড়িতে থাকতে বলা হয়।
গত ১৫ মে রাজধানী ব্যাংককে অন্তর্বর্তী সরকারবিরোধীদের ক্যাম্পে দুর্বৃত্তদের হামলায় অন্তত তিনজন নিহত ও ২০ জন আহত হওয়ার ঘটনার পর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ‘অভ্যুত্থানেরই’ ইঙ্গিত দেন সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, সহিংসতা অব্যাহত থাকলে ‘ফোর্স’ ব্যবহার করবে সশস্ত্র বাহিনী।
চ্যান-ওচা বলেন, যদি সহিংসতা অব্যাহত থাকে তবে শান্তি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনীর বাইরে আসা প্রয়োজন...।
অন্তর্বর্তী সরকারে ক্ষমতাসীন পেউ থাই পার্টির বিরুদ্ধে বিরোধীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে মূলত সাদা হাতির দেশটিতে অশান্তির বাতাস বইতে শুরু করে।
ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। ইংলাক তার ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিনকে দুর্নীতির দায় থেকে বাঁচাতে এবং তার পরামর্শে রাষ্ট্র চালাচ্ছেন অভিযোগ করে গত অক্টোবর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু করে প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেট পার্টির নেতা ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী সুথেপ থাউগসুবানের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে ফেব্রুয়ারিতে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন ইংলাক। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে প্রধান বিরোধী দল অভিজিৎ ভেজাজিভার নেতৃত্বাধীন ডেমোক্রেট পার্টিও নির্বাচন বর্জন করে।
নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণে গত ১৪ মে নির্বাচন কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিরা এ নিয়ে বৈঠকে বসার কথা থাকলেও নিরাপত্তার কারণে তা স্থগিত করা হয়।
তারপর থেকে ব্যাংককের রাস্তায় মুখোমুখি বিক্ষোভ শুরু করে লাল শার্ট ও হলুদ শার্টধারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৪