ঢাকা: মালয়েশিয়া পৌঁছে ঘরে ফেরার কথা ছিল সঞ্জিদ সিংয়ের। ছেলের পছন্দের সব খাবারই তৈরি করেছিলেন ৭৩ বছর বয়সী মা।
দু’বার ওপেন হার্ট সার্জারি হওয়া বাবা জিজার সিং (৭১) একমাত্র ছেলে হারানোর বেদনা এভাবেই জানালেন সংবাদ মাধ্যমকে।
বৃহস্পতিবার রাতে ইউক্রেনের রাশিয়া সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে ২৯৮ জন আরোহী নিয়ে মালয়েশিয়ার এমএইচ১৭ যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ‘ভূপাতিত’ হয়। এতে ২৮৩ জন যাত্রীসহ ১৫ জন ক্র’ও নিহত হন। এর মধ্যে সঞ্জিদ সিং একজন।
ফ্লাইট পরিবর্তন করে সঞ্জিদ ওঠেন এমএইচ১৭ উড়োজাহাজে। সেটাই কাল হলো সঞ্জিদ সিংয়ের।
এর আগে গত ৮ মার্চ কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে নিঁখোজ হয় মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের এমএইচ৩৭০ উড়োজাহাজটি। ওই উড়োজাহাজে চড়তে চেয়েছিলেন ‘দুর্ভাগা’ সঞ্জিদ সিংয়ের স্ত্রী। শেষ মুহূর্তে সহকর্মীদের জোরাজুরিতে ফ্লাইট মিস করলে বেঁচে যান তিনি।
সাত বছরের একমাত্র ছেলে সন্তান নিয়ে কুয়ালালামপুরে বসবাস করতেন সঞ্জিদ সিং।
বাবা জিজার সিং বলেন, শেষ বার যখন বাড়ি এসেছিল তাও একমাস হয়ে গেছে। সে আমাকে জানিয়েছিল সম্প্রতি এক সহকর্মীসহ আমস্টার্ডাম-কুয়ালালামপুর ফ্লাইটে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, ইতালিতে বসবাসকারী মেয়ে (সঞ্জিদ সিংয়ের বোন) শুক্রবার ভোরে ঘটনার চার ঘণ্টা পর আমাকে বিষয়টি জানায়। ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি সে আমাদের কিভাবে জানাবে তা নিয়ে ব্যাপক দ্বন্দ্বের মধ্যে ছিল। ঘটনায় আমরা এখন স্তম্ভিত। আমার পুরো শরীর কাঁপছে।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। এখন আমাদের কী হবে, আমরা কী করবো বুঝতে পারছি না?
উড়োজাহাজে বিধ্বস্ত নিহতদের মধ্যে ১৭৩ জন নেদারল্যান্ডসের, ৪৪ জন মালয়েশীয়, ২৭ জন অস্ট্রেলীয়, ১২ জন ইন্দোনেশীয়, ৯ জন ব্রিটিশ, ৪জন জার্মান, ৪ জন বেলজিয়াম, ৩ জন ফিলিপিন্স, ১ জন কানাডিয়ান ও ১ জন নিউজিল্যান্ডের নাগরিক। তবে অবশিষ্ট ২০ জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৪