আবিদজান: আইভরি কোস্টের শাসক লরা বাগবোর আবিদজানের বাড়ি এবং প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘিরে শুক্রবার সকালে আবারও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। আবিদজানের বাসিন্দা ও বার্তাসংস্থা এএফপির সাংবাদিকরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
দক্ষিণের শহরতলি কোকোদাইয়ের এক বাসিন্দা এএফপিকে বলেন, ‘গোলাগুলি থামেনি। বাগবোর বাহিনী সব উপায়ে তা প্রতিরোধের চেষ্টা করছে। আমরা গোলা, আরপিজি৭ (রকেট) এবং মেশিন গানের ভয়াবহ শব্দ শুনতে পাচ্ছি। ’
এ স্থানেই বাগবো বসবাস করেন। তবে এখনও বাগবোর এই বাড়িতে অবস্থান করার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১০টা থেকেই আবাসিক এলাকার কাছাকাছি বাগবোর অনুগত সেনাবাহিনী এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট আলাসেন ওয়াত্তারার বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার ওয়াত্তারার বাহিনী দেশটির অর্থনৈতিক রাজধানী আবিদজানে প্রবেশ করেন। বৃহস্পতিবার রাতেই তারা শহরটির বিমানবন্দর এবং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দখল করে নেয়।
শুক্রবার প্রশাসনিক জেলা প্লাতেয়াতেও ভয়াবহ গোলার শব্দ শোনা যায়। এখানেই প্রেসিডেন্টের বাসভবন অবস্থিত।
নভেম্বরে আইভরি কোস্টে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ওয়াত্তার কাছে হেরে যাওয়ার পরও ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে অস্বীকৃত জানায় বাগবো। পরবর্তীতে গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
কিন্তু স্বেচ্ছায় তিনি পদত্যাগ না করায় এখন তাকে জোর করে উৎখাতের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে প্রায় ৫০০ বিদেশী আইভরি কোস্টে অবস্থিত ফ্রান্সের সেনা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে শুক্রবার ফ্রান্সের এক সেনা জানান।
ফ্রান্সের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র থাইয়েরি বুর্খহার্দ প্যারিসে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফ্রান্সের প্রায় ১৫০ নাগরিক এবং আরও ৩৫০ বিদেশী পোর্ট-বুয়েতের ক্যাম্পে অবস্থানের উদ্দেশ্যে আসেন। ’
এর মধ্যে অনেকে লেবাননের জনগণ বলে প্যারিসে আলাদাভাবে ফ্রান্সের এক কূটনীতিক এএফপিকে বলেন।
আইভরি কোস্টে বাগবো এবং ওয়াত্তারার বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকেই সেখানে অবস্থিত ফ্রান্সের জনগণকে রক্ষায় ফ্রান্সের সেনাবাহিনী রাজধানীর কিছু অংশে অবস্থান করছেন।
নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ জন নিহত এবং লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হওয়াসহ দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১১