ওয়াশিংটন: লিবিয়ায় বিমান হামলা থেকে সরে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্তৃপক্ষ পেন্টাগন। শুক্রবার মার্কিন দৈনিক ফক্সনিউজ এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার পর যে ঘাটতি সৃষ্টি হবে তা ন্যাটোর অংশীদাররা পূরণ করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার এ ঘোষণার পর দেশটির কংগ্রেসে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। কংগ্রেস সদস্যরা প্রশ্ন করেন, ওবামা প্রশাসন কেন লিবিয়ার সাধারণ জনগণকে রক্ষার অভিযান থেকে কাছ থেকে পিছু হটছে? কেন মুয়াম্মার গাদ্দাফির সেনাবাহিনীর কাছে নত হচ্ছে?
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস ও জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল মাইক মুলেন শনিবার নাগাদ লিবিয়ায় আমেরিকার যুদ্ধাভিযান শেষ হবে বলে ঘোষণা দেন। এরপর সিনেটররা ‘অস্বাভাবিক’, ‘উদ্বেগজনক’, ‘ভীতিজনক’ ইত্যাদি মন্তব্য করেন।
গেটস ও মুলেন মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী সংক্রান্ত বিভিন্ন কমিটির সামনে হাজির হন। তারা লিবিয়ার বিদ্রোহীদের হাতে অস্ত্র বা তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও বিরোধিতা করেন। তাদের মতে, এই দায়িত্ব আরব অঞ্চল বা অন্য দেশগুলোর। তবে হোয়াইট হাউজ থেকে বারবার বলা হয়েছে, বিদ্রোহীদের হাতে অস্ত্র দেওয়ার বিষয়টি বাতিল করা হচ্ছে না।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমার মতামত হচ্ছে, বিরোধীদের যদি কোনো সহায়তা দিতেই হয়, তাহলে এর অনেক উৎস আছে। ’
এদিকে, হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জে কার্নি বলেন, গেটসের মন্তব্য ও প্রেসিডেন্ট ওবামার কথার মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। ’ অথচ ওবামার উপদেষ্টারা খুব খোলাখুলিভাবেই বিরোধীদের সহায়তা দেওয়ার পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন।
মুলেন ও গেটস জোরারোপ করে বলেন, শক্তিশালী যুদ্ধবিমান এসি-১৩০ ও এ-১০ থান্ডারবোল্টের অভিযান শনিবারের পর অভিযান বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে এগুলো প্রস্তুত রাখা হবে। বিদ্রোহীদের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে গেলে, ন্যাটোর শীর্ষ কমান্ডাররা অনুরোধ করলে এগুলো ব্যবহার করা হবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকারী বিমান মেরিন এভি-৮বি হ্যারিয়ার ও যুদ্ধবিমান এয়ারফোর্স এফ-১৫ এবং দীর্ঘ পাল্লার বোমারু বিমান বি-২ ও বি-১ লিবিয়া অভিযানে অংশ নেয়।
রোববার ফ্রান্স, ব্রিটেন ও ন্যাটোভুক্ত অন্য দেশগুলোর লিবিয়ার সামরিক স্থাপনগুলোর ওপর বিমান হামলা পরিচালনায় অংশ নেবে। তবে ১৯ মার্চ শুরু হওয়া অভিযানে ভূমধ্যসাগরে অবস্থান নেওয়া মার্কিন নৌযান ও ডুবোজাহাজ থেকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রাখকে কিনা তা পরিষ্কার নয়।
লিবিয়া অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে এ মুহূর্তে পেছনের আসনে নিয়ে গেছে। তবে গাদ্দাফি-বিরোধীদের শক্তিশালী করা হবে কি না সে বিষয়টিও পরিষ্কার নয়। যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা জেমস ডিউবিক বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেন, লিবিয়ার ভূমি থেকে ন্যাটোর যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রশিক্ষকও প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১১