ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ রবিউস সানি ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ষাট ঘণ্টায় ‘শেষ’ হলো সাত ঘণ্টার ফ্লাইট!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:২১, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৪
ষাট ঘণ্টায় ‘শেষ’ হলো সাত ঘণ্টার ফ্লাইট! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: চড়েছেন মাত্র সাত ঘণ্টার ফ্লাইটে। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়ার বাধায় পড়ে আট গুণেরও বেশি সময় উড়তে হয়েছে ইতালির মিলান থেকে ভারতের নয়াদিল্লিগামী ২৫৯ যাত্রীকে।

আর সাত ঘণ্টার জন্য উড়াল দিয়ে শেষ পর্যন্ত ষাট ঘণ্টায় চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছুতে সক্ষম হয়েছেন এয়ার ইন্ডিয়ার ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের।

ফ্লাইটটির যাত্রীদের ক্ষোভ ঝরছে এভাবে যে, এই উড়োজাহাজ যাত্রা ‘সবচেয়ে জঘন্য’ হিসেবে লেখা থাকবে তাদের ভ্রমণের খাতায়।

যাত্রীরা জানান, গত ২৩ ডিসেম্বর ভারতীয় সময় রাত আড়াইটায় ইতালির মিলান থেকে ফ্লাইটটি ছাড়ার সূচি নির্ধারিত হয়। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে সময় পিছিয়ে ২৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১২টা নির্ধারণ করা হয়।

ওই দিন রাত সাড়ে ১২টায় ফ্লাইটটি উড্ডয়নের পর সাত ঘণ্টার মধ্যেই নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর প্রহর গুনছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু এ অপেক্ষা যে কল্পনাতীত দীর্ঘ হয়ে যাবে তা বোধ হয় তারা ভাবেননি।

সকাল ৯টা পর্যন্ত নয়াদিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আকাশে বেশ কিছু সময় চক্কর দিয়েও ঘন কুয়াশার কারণে অবতরণে ব্যর্থ হয় ফ্লাইটটি। এরপর যাত্রীদের জানানো হয় ফ্লাইটটি মুম্বাইয়ে অবতরণ করা হবে।

কিন্তু মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও দু’দফায় চক্কর দিতে হয় ফ্লাইটিকে। শেষ পর্যন্ত ২৪ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে অবতরণ করতে সমর্থ হয় ফ্লাইটটি।

সেখানে অবতরণের আগে যাত্রীদের জানানো হয়, অবতরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আরেকটি ফ্লাইটে চড়িয়ে তাদের মুম্বাই থেকে দিল্লিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু মুম্বাইয়ে অবতরণের পর নতুন ফ্লাইটটি পড়ে ক্রু সংকটে। এই সংকটের কারণে রাত ৮টার সেই ফ্লাইট বিলম্বিত হয় রাত সাড়ে ৯টায়।

যাত্রীদের কাছে তাদের গন্তব্য যেন ‘এতো কাছে তবু এতোদূর’র হয়ে পড়ে। ‍রাত সাড়ে ৯টার ফ্লাইটটি ২০০ কিলোমিটার উড়ে নয়াদিল্লিতে অবতরণ করতে গিয়ে আবারও বাধার মুখে পড়ে। সেই ফ্লাইটের পাইলট জানান, কুয়াশা এতোই ঘন যে তাদের পক্ষে অবতরণ করা সম্ভব নয়। অগত্যা নতুন ফ্লাইটটিই আবার মুম্বাইয়ে ফিরে আসে।

এরপর সেখানে ১০ ঘণ্টার বিরক্তিকর অপেক্ষা শেষে ২৫ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াদিল্লির উদ্দেশে উড়াল দেয় সেই ফ্লাইটটি। শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছে ‍দুপুর দেড়টায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী বলেন, কতোবার যে আমাদের তল্লাশিতে পড়তে হয়েছে আর কতোবার যে ব্যাগ নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। এই ফ্লাইটে ওঠো, এই নামো, এই চেক ইন- এই চেক আউট। জঘন্য যাত্রা।

মিলানের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানপড়ুয়া নিতেশ বার্মা বলেন, আমি ১০ দিন  ছুটি নিয়ে পরিবারের কাছে বেড়াতে এসেছি। কিন্তু ফ্লাইট প্রক্রিয়াই আমার প্রায় চার দিন শেষ করে দিলো। এখন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর বাকি থাকলো কী?

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।