আবিদজান: আইভরি কোস্টের প্রেসিডেন্ট অ্যালাসানে ওয়াত্তারা সদ্য ক্ষমতাচ্যূত সামরিক সরকারের প্রধান লরা বাগবো ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। খবর এএফপির।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক এ কর্মকর্তা গত ১১ এপ্রিল শীর্ষ কোকো উৎপাদক দেশটির ক্ষমতা নেন। এদিনই তার অনুসারী সেনারা আবিদজানে বাগবোর প্রাসাদে প্রবেশ করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে।
বাগবোর গ্রেপ্তারের এক সপ্তাহ পরেই সোমবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবার কাজে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ওয়াত্তারা।
বিচারমন্ত্রী জিনো আহোসো বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, বাগবোর শাসনামলে তার অনুসারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনা রক্তপাত, অবৈধভাবে অস্ত্র কেনা এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করতে কৌঁসুলিদের নির্দেশ দেবেন তিনি।
অভিযুক্তদের মধ্যে সরকারি বেতার আরটিআই-এর সাংবাদিক-প্রতিবেদকরাও থাকবে। এ প্রতিষ্ঠানটিকে বাগবো সরকারের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী প্রচারযন্ত্র হিসেবে দেখা হয়।
আহোসো আরও বলেন, আইভরি কোস্টের প্রচলিত আইন যারা লঙ্ঘন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে।
বাগবোর গ্রেপ্তারের পর দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, লোকজন কাজে ফিরছে, শহরের দোকানপাট খোলা হচ্ছে। লোকজন রাস্তায় বের হচ্ছে। শিশুরা গির্জায় যাচ্ছে।
আফ্রিকার দেশ আইভরি কোস্টে গত এক দশক ধরে জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা সামরিক শাসক লরা বাগবো গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যালাসানে ওয়াত্তারার কাছে হেরে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে তিনি বিরোধীদের ওপর সামরিক নিপীড়ন চালান। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল ওয়াত্তারাকে সমর্থন দেয়।
পরে ওয়াত্তারার সমর্থক সেনাদের প্রতিরোধের মুখে বাগবো গৃহবন্দি হয়ে পড়েন। জাতিসংঘ শান্তিবাহিনী ও দেশটির সাবেক উপনিবেশিক প্রভু ফ্রান্সের সহায়তায় গত ১১ এপ্রিল তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, ওয়াত্তারার সরকার বলছে, বাগবোর সঙ্গে গ্রেপ্তার করা তার পরিবারের সদস্যসহ প্রায় ৭০ জন অনুসারীকে শনিবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বাগবোর সঙ্গে বন্দি আরও ১২০ অনুসারীকে একটি গোপন জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এদের মধ্যে, বাগবোর পরিবারের ৩০ সদস্য রয়েছে। তার বাড়ির পাচক ও মালিসহ আরও ৩৮ জনকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এখন তারা তাদের বাড়িতেই থাকতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১১