হোমস: প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পদত্যাগ দাবিতে সরকারবিরাধী হাজার হাজার বিক্ষোভকারী সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর হোমসে অবস্থান নিয়েছে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।
সোমবার রাতে বিক্ষোভকারী এক নারী বিবিসিকে ফোনে এমন কথা জানিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের একজন নাজাফি তায়ারা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘শহরের আল-সা স্কোয়ারের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ অবস্থান নিয়েছে। আমরা একে তাহরির স্কয়ার নাম দিয়েছি। ’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি চলবে। ’
এদিকে একজন মানবাধিকার কর্মী জানিয়েছেন, বাশারের অনুগত নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে। তবে এতে কত হতহতের ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিত করে তিনি বলতে পারে নি।
সিরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এ অস্থিরতা সশস্ত্র বিদ্রোহের রুপ নিতে যাচ্ছে। যদি তা হয় তাহলে তা কোনো ক্রমেই সহ্য করা হবে না।
এর আগে সোমবার দুপুরের দিকে রোববারের সহিংসতায় নিহতদের জানাজায় জড়ো হওয়া হাজার হাজার জনতা বাশার আল আসাদের শাসনামলের অবসান চেয়ে মিছিল করে। তারা সিরিয়ার দীর্ঘদিনের জরুরি আইন প্রত্যাহার এবং রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি চান।
এসময় হোমসে সেনাবাহিনীর গুলিতে ৮ বিক্ষোবকারী নিহত হয়। কারাগারে বন্দি একজন উপজাতি নেতার মুক্তির দাবিতে তারা বিক্ষোভ করছিল।
এর আগের ঘটনাগুলোতে জানা যায়, বিশেষ করে হোমস ও বানিয়াসে সশস্ত্র চরমপন্থী সালাফি গ্রুপ সশস্ত্র বিদ্রোহ ঘটানো হচ্ছে। পশ্চিমাদেরও আশঙ্কা এই সুযোগে হয়ত সালাফিদের মতো জঙ্গি গ্রুপের উত্থান ঘটবে দেশটিতে।
সিরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, হোমসের ঘটনায় তিনজন সেনা কর্মকর্তা যাদের মধ্যে এক জন ব্রিগেডিয়ার ও তার দুই ছেলে ও ভাতিজাকে রোববার সশস্ত্র গ্যাং হত্যা করেছে। তাদের শরীর ধারালো অস্ত্র দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করা হয়েছে বলেও সংবাদ মাধ্যমে জানানো হয়।
রোববার উত্তরাঞ্চলীয় শহর বানিয়াসেও সরকারবিরাধী বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে ১৬ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ছাড়াও সম্প্রতি তিনি প্রশাসনে সংস্কারের কথা বলেছেন।
কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাতে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। তারা সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করছেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, গত চার সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ২০০ জন নিহত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১১