ঢাকা: এগারো বছর আগের কথা। ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চল থেকে একজন কিশোরীকে পছন্দ করা হয়।
ইয়েমেনি আল কায়েদার নেতা শেখ রাশেদ মোহাম্মাদ সাঈদ ইসমাইল এ বিয়ের আয়োজন করেন। এটা লাদেনের পঞ্চম বিয়ে।
২০০০ সালে জুলাইয়ে তিনি কনে পক্ষের হয়ে আফগানিস্তানে আসেন। গত বছর ইসমাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিশোরী হলেও মেয়েটি অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ ছিল। লাদেন যা বিশ্বাস করতেন সেও তাই বিশ্বাস করত। ’ লাদেন তার পূর্বপুরুষদের দেশ ইয়েমেনে একটি রাজনৈতিক যোগসূত্র পেয়েছিলেন সেই বিয়ের মাধ্যমে।
বিয়ের এক বছর পর অমল আল-সাদাহ একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। নাম রাখা হয় সাফিয়া। এই মেয়েটিই বোধহয় এখন পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে রয়েছে।
তবে আল কায়েদাপ্রধানের পাঁচজন স্ত্রার গর্ভে ২০টির বেশি সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে। তার একজন ছেলে আবোটাবাদে অভিযানের সময় নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
লাদেনের সর্বপ্রথম বিয়ে হয় ১৭ বছর বয়সে, খালাত বা চাচাত বোন নাজওয়া ঘানেমের সঙ্গে। নাজওয়া তার চেয়ে দুই বছরের ছোট। তাদের ১১টি ছেলেমেয়ে। লাদেনের সঙ্গে কিছুদিন ভবঘুরে জীবন কাটানোর পর নাজওয়া তাকে ছেড়ে যায়, ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলার কিছু আগেই।
লাদেনের দ্বিতীয় স্ত্রী খাদিজা শরিফ তার চেয়ে নয় বছরের বড়। উচ্চশিক্ষিত এবং নবী মুহাম্মদের (সা:) সরাসরি বংশধর। ১৯৮৩ সালে তাদের বিয়ে হয়। তবে ১৯৯০-এর দশকে সুদানে বসবাসে সময় তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। খাদিজার গর্ভে ছেলেমেয়ে তিনটি। লাদেনের দেহরক্ষী আবু জিনদাল বলেন, ওসামার কঠোর জীবনযাপন খাদিজা সহ্য করতে না পেরে সৌদি আরবে চলে যান।
আল কায়েদাপ্রধানের প্রথম স্ত্রী নাজওয়া তৃতীয় বিয়ের আয়োজন করে। কনে খায়রিয়াহ সাবার। তিনিও উচ্চশিক্ষিত। ইসলামি শরিয়ার ওপর তার ডক্টরেট ডিগ্রি আছে। ১৯৮৫ সালে তাদের বিয়ে হয়। আফগানিস্তানে মার্কিন হামলার পর তার কথা আর শোনা যায়নি। ২০০১-এর অক্টোবর ও নভেম্বরে বোমা হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন বলেও অনেকে মনে করেন। সাবারের গর্ভে এক ছেলে।
এরপর ১৯৮৭ সালে সিহাম সাবার ও বিন লাদেনের বিয়ে হয়। তাদের চার ছেলেমেয়ে। আফগানিস্তানে হামলার পর তার কথাও আর শোনা যায়নি।
আবু জিনদালের মতে, লাদেনের মোট ১১ জন ছেলে। এদের মধ্যে কেউ কেউ বাবাকে ছেড়ে চলে গেছে। তবে মেয়ের সংখ্যা বিষয়ে জিনদাল কিছু বলতে পারেননি।
টুইন টাওয়ারে হামলার কয়েক সপ্তাহ পর পাকিস্তানি সাংবাদিক হামিদ মীরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লাদেন তার সবচেয়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা জানান। মীরকে তিনি বলেন, ‘১১ সেপ্টেম্বরের পর আমি একটি মেয়ে সন্তানের বাবা হয়েছি। আমি নবী মুহাম্মদের (সা:) একজন সাহাবীর নামানুসারে তার নাম রেখেছি সাফিয়া, যে একজন ইহুদি গোয়েন্দাকে হত্যা করে। আমার মেয়েও সেই সাফিয়ার মতো ইসলামাদের শত্রুদের হত্যা করবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১১