ইসলামাবাদ: আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে জীবিত ধরতে অথবা মেরে ফেলতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের গোপন চুক্তির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ। লন্ডন ভিত্তিক দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার দুবাইতে তার মুখপাত্র এ কথা জানান।
এর কয়েক দিন আগে গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় এক দশক আগে ইসলামাবাদ এবং ওয়াশিংটন একটি গোপন চুক্তি করে। বিন লাদেন ও আল কায়েদার আরো দুই শীর্ষ নেতাকে ধরতে পাকিস্তানের মাটিতে অভিযান চালাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুমতি দেওয়া হয় ওই চুক্তিতে।
মোশাররফের মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, ‘গণমাধ্যমে তিনি (মোশাররফ) একটি প্রতিবেদন দেখেছেন। এরকম চুক্তি তার শাসনামলে হয়নি এ বিষয়টি তিনি আমাকে পরিস্কার করতে বলেছেন। এমনকি এরকম কোনো মৌখিক সমঝোতাও হয়নি। ’
গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন ফাওয়াদ চৌধুরী।
গত বৃহস্পতিবার দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে মার্কিন কর্মকর্তা এবং পাকিস্তানি অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তোরা-বোরা পাহাড়ি এলাকায় বিন লাদেন মার্কিন বাহিনীর হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর মোশাররফের সঙ্গে জর্জ বুশের এই চুক্তিটি হয়। চুক্তিতে বলা হয়, যদি পাকিস্তানে এমন অভিযান পরিচালনা করা হয় তাহলে একপাক্ষিক অভিযানের কারণে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ জনসমক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা করবে।
মার্কিন বিশেষ বাহিনী গত ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে অভিযান চালিয়ে বিন লাদেনকে হত্যা করে। যুক্তরাষ্ট্রের চরম বিরোধী পাকিস্তানি জনগণ এ অভিযানকে জাতীয় লজ্জা বলে মনে করছে। একে পকিস্তানের সার্বভৌমত্বের জন্য মর্যাদাহানীকর বলে মনে করছেন অনেকে।
২০০২ সালের জানুয়ারিতে বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে জেনারেল টমি ফ্র্যাংকস পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সমঝোতার কথা প্রকাশ করেন। জঙ্গিদের ধরতে আফগানিস্তানে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের পাকিস্তানের ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে ওই সমঝোতা হয়েছিল বলে জানান তিনি। ওই সময় তিনি মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রধান ছিলেন।
তবে পাকিস্তান এ ধরনের কোনো চুক্তির কথা অস্বীকার করে।
মি. চৌধুরী বলেন, যদি এরকম কোনো চুক্তি থাকে তাহলে পাকিস্তান সরকারকে তা সংসদে উত্থাপন করা উচিত। আর যদি এমন কোনো গোপন চুক্তি হয়েই থাকে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তা জনসমক্ষে আনা।
দুবাইতে মি. চৌধুরী এপিকে এসব কথা বলেন। মোশাররফও বর্তমানে এখানে অবস্থান করছেন।
তিনি আরো বলেন, তার শাসনামলে পাকিস্তানে অভিযান চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন মোশাররফ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১১