ঢাকা: বিশ্বে প্রতিবছর সড়ক দুঘটনায় ১০ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। প্রতিদিন মারা যান ৩,২৮৭ জন।
এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর আহত বা পঙ্গুত্ববরণ করেন ২০ কোটি থেকে ৫০ কোটি মানুষ। আর এ সব দুর্ঘটনার বেশির ভাগই ঘটে থাকে মধ্য-আয়ের দেশগুলোতে। এ সব দেশের সড়ক নিরাপত্তায় ঘাটতির কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে বলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন ফর সেফ ইন্টারন্যাশনাল রোড ট্রাভেল (এএসআইআরটি)।
এর একটি বড় কারণ একমুখী সড়কে ওভারটেকিং।
সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে এবার আর্জেন্টিনার একটি প্রযুক্তি কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে সড়ক নিরাপত্তায় ‘দ্য সেফটি ট্র্যাক’ নামে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ হাতে নিয়েছে কোরিয়াভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্ট স্যামসাং।
আর্জেন্টিনার স্যামসাং কর্পোরেট হাউস সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে তাদের ট্রেইলারসহ পরিবহন কার্গো গাড়িতে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা ও ও ওয়্যারলেস স্ক্রিন ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। সড়ক নিরাপত্তায় গাড়ির সামনে লাগানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। আর গাড়ির পেছনের অংশে বড় আকারের চারটি স্ক্রিন। এর সঙ্গে যুক্ত রাখা হয়েছে ওয়্যারলেস ভিডিও ফিড। এই ফিডের মাধ্যমে ক্যামেরার রিয়াল টাইম ভিডিও চলে যাবে গাড়ির পেছনের বড় স্ক্রিনে।
এতে করে রাস্তায় গাড়ির সামনে কী অবস্থা বিরাজ করছে, তা স্পষ্ট দেখা যাবে গাড়ির পেছনে লাগানো স্ক্রিনে। এতে করে পেছনের গাড়ির চালক সামনের গাড়ির সামনে কী আছে, তা দেখে ওভারটেক করতে পারবেন। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে।
ওভারটেক সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। কারণ, পেছনের গাড়ি যখন দ্রুতগতিতে সামনের গাড়িকে পাশ কাটিয়ে আগে যেতে চায়, তখন চালক বুঝতে পারেন না সামনে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা আছে কিনা। ফলে, যখন পেছনের গাড়ি ওভারটেক করার চেষ্টা করে, তখনই বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে উদ্ভাবিত কৌশলকে বলা হচ্ছে- ‘দ্য সেফটি ট্রাক’ (The Safety Truck)। এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে স্যামসাং বিজ্ঞাপন কোম্পানি লিও বার্নেট ও আর্জেন্টিনার স্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানি ইনজেমেটিকার সহায়তা নিয়েছে।
আর্জেন্টিনায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি ঘণ্টায় একজন করে মারা যান। এর কারণ মূলত ওভারটেকিং। সে কারণে সে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে গবেষণা করা হচ্ছিল। অবশেষে সড়কে এই প্রযুক্তির পরীক্ষা চালানো হয়। এ পরীক্ষায় শতভাগ সফলতা পাওয়া গেছে।
মূলত একমুখী সড়কে যান চলাচলে সড়ক নিরাপত্তায় ‘দ্য সেফটি ট্র্যাক’ সফল প্রমাণিত হয়েছে।
এই প্রযুক্তির বড় সফলতা হলো, রাতের বেলাতেও পেছনের গাড়ির চালক সামনের গাড়ির সামনে কী আছে, তা ওই গাড়ির পেছনের স্ক্রিনে স্পষ্টভাবে সব কিছু দেখতে পারছেন। শুধু তাই-ই নয়, এর পেছনের গাড়টির চালকও সামনের গাড়ির ওভারটেকিংয়ের দৃশ্য ওই স্ক্রিনে দেখতে পারেন। এতে করে তিনি স্ত্রিন দেখে নিজের গাড়ির গতি ও অবস্থান কী করতে হবে, তা চটজলদি নির্ধারণ করতে পারবেন। এতে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা থেকে নিজের গাড়িকেও রক্ষা করতে পারবেন।
এখন আশা করা যায়, প্রযুক্তির এই যুগে সড়কপথের ‘দ্য সেফটি ট্র্যাক’ প্রযুক্তি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিশ্বব্যাপী বিপ্লব ঘটাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৫
এবি