ঢাকা: নেপালে ভারতীয় ৪২টি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের প্রদর্শনী বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির কেবল অপারেটররা।
নতুন সংবিধান প্রণয়নকে কেন্দ্র করে নেপালের ওপর অঘোষিত অবরোধ আরোপ ও দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের নাক গলানোর অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নেপালে ভারতীয় এসব চ্যানেলের প্রদর্শন বন্ধ রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে।
দেশটির ক্যাবল টিভি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুধীর পরাজুলি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অনির্দিষ্টকাল ধরে এ অবরোধ চলবে। ’
ভারতীয় চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারত নেপালের সার্বভৌমত্বে অনুপ্রবেশ করেছে। এর প্রতিবাদে আমাদের এ অবরোধ। ’
এছাড়া মাওবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে নেপালে ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও হিন্দি সিনেমা প্রদর্শনী বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ভারতীয় এসব টিভি চ্যানেল রাজধানী কাঠমান্ডুসহ নেপালের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়। এরইমধ্যে দেশটির পোখারা, চিতোয়ান ও মহেন্দ্রনগর এলাকায় ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলো এরইমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাঠমান্ডু থিয়েটারে দুইদিন আগে থেকেই হিন্দি সিনেমা দেখানো বন্ধ রয়েছে।
এরমধ্যে ভারত-নেপাল সীমান্তে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে দেশটিতে পণ্য সরবরাহ বন্ধ রেখেছে ভারত। কেননা নেপাল প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন পণ্যের রফতানির ওপর বেশিরভাগ নির্ভরশীল।
নেপালিরা অভিযোগ করছেন, সংবিধানের সমালোচনা করে ভারত তাদের পণ্য পরিবহনে অঘোষিত অবরোধ করেছে।
তবে পণ্য অবরোধের বিষয়টি অস্বীকার করেছে ভারত। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অবরোধসহ বিক্ষোভের মধ্যে সার্বিক নিরাপত্তার কারণেই তা বন্ধ রয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম বলছে, নেপাল হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশ। এর রয়েছে সাতটি প্রদেশ। যা কেন্দ্র থেকে শাসিত হয়। কিন্তু নতুন সংবিধানে দেশটিকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রে’র মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে ওই সংবিধানে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা, প্রাচীন যুগ থেকে প্রচলিত ধর্ম ও সংস্কৃতির সুরক্ষা, ধর্মীয় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য নিয়ে বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
আর এসব বিষয় উল্লেখ থাকায় উদ্বিগ্ন দেশটির সীমান্ত সংলগ্ন তেরাই অঞ্চলের মদেশি ও থারু সম্প্রদায়। এই দুই জনগোষ্ঠী নেপালের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ।
থারু ও মদেশি জনগোষ্ঠীর আশঙ্কা, নতুন সংবিধান অনুযায়ী রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিক হয়ে পড়বে তারা।
আর এরপর থেকেই থেকে এই দুই জনগোষ্ঠীর মানুষ বিক্ষোভ করছেন নেপালে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সংবিধানের বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনায় বসারও আহ্বান জানিয়েছে ভারত। যা ভালো চোখে দেখছে না নেপালিরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫, আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা
এমএ