ঢাকা: ‘মা, আমি আত্মঘাতী মিশনে আছি। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবার খেয়াল রাখবেন।
শনিবার (২ জানুয়ারি) ভারতের পাঞ্জাবে দেশটির পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার আগে মধ্যরাতে এক সন্ত্রাসী ও তার মায়ের মধ্যে এমনই সংলাপ হয়। গোয়েন্দা সংস্থা সেই ফোনালাপ ট্র্যাক করেছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
ওই সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, শনিবার গভীর রাত ১টা ৫৮ মিনিটে ওই সন্ত্রাসী ও তার মায়ের মধ্যে ৭০ সেকেন্ডের আলাপ হয়। এসময় সন্ত্রাসীকে বলতে শোনা যায়, ‘মা, আমি আত্মঘাতী মিশনে আছি। ’ তার এ কথায় কোনো সায় দেয় না ওপাশ। সন্ত্রাসী সন্তান আবার বলতে থাকে, ‘আমি আত্মঘাতী মিশনে আছি। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবার খেয়াল রাখবেন। ’ এরপরও ফোনের ওপাশ থেকে কোনো শব্দ আসে না।
ওই সংলাপের দু’ঘণ্টা পরই পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তৎক্ষণাৎ ভারতীয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী অভিযানে নামলে জঙ্গিদের সঙ্গে ১৭ ঘণ্টাব্যাপী থেমে থেমে বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে চার সন্ত্রাসী ও বিমান বাহিনীর তিন সদস্য নিহত হন। পরে নিহত হন বিমান বাহিনীর আরও চার সদস্য ও এক সন্ত্রাসী।
সূত্র জানায়, সন্ত্রাসী ছেলে পাকিস্তানের কোনো একটি স্থানে থাকা তার মায়ের সঙ্গে আলাপ করছিল বলে ট্র্যাকিংয়ে ধরা পড়েছে। তবে, কিছু কিছু আলাপ পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না। সন্ত্রাসী পাঞ্জাবি ও মুলতানি ভাষায় কথা বলছিল।
নিরাপত্তা বাহিনীর ট্র্যাক করা আরও বেশ কিছু ফোনালাপে পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলার ইঙ্গিত রয়েছে জানাচ্ছে সূত্রটি। সূত্রমতে, ৮৭ সেকেন্ডের আরেক ফোনালাপে এক প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘এটা কি নিয়ন্ত্রণে?’, তখন আরেক প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘হ্যাঁ। ’ তারপর নির্দেশনা দেওয়া হয়, ‘বিমান বাহিনীর সরঞ্জাম, হেলিকপ্টার, উড়োজাহাজ সব উড়িয়ে দাও। ’
তবে, একটি ফোনালাপের ‘তাকে বোঝাও, আমরা চিন্তিত’ বাক্যটি নিরাপত্তা বাহিনীকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বলেও জানাচ্ছে সূত্রটি।
পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় এখন পর্যন্ত সাত সেনা সদস্য ও পাঁচ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। সেনা সদস্যদের মধ্যে একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদধারী কর্মকর্তাও রয়েছেন। পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দেয়নি ভারতীয় বাহিনী।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৬
এইচএ