ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

থাইল্যান্ডে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন থাকসিনের বোন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১১
থাইল্যান্ডে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন থাকসিনের বোন

ফিবুন মাংসাহান: থাইল্যান্ডে আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হিসেবে প্র্রচারণা শুরু করেছেন থাকসিন সিনাওয়াত্রার ছোট বোন ওয়াইংলাক সিনাওয়াত্রা। নির্বাচনে জয়ী হলে থাইল্যান্ডের ইতিহাসে তিনিই হবেন প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী।



পাঁচ বছর আগে এক সামরিক অভ্যূত্থানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা ক্ষমতাচ্যুত হন। এর পরই দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। অন্তরবর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন অভিজিত ভেজ্জাজিভাস। কিন্তু গত বছর থাকসিন সমর্থকদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে দেশে নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। বিক্ষোভে সামরিক বাহিনীর হামলায় ৯০ জন নিহত এবং ২ হাজার জন আহত হন। রাজধানী ব্যাংকক অচল হয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার এক নির্বাচনী সভায় ওয়াইংলাক হাজার হাজার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘যদি আপনারা আমার ভাইকে ভালবাসেন তাহলে তার ছোট বোনকে একটি বারের মতো সুযোগ কি দেবেন?

এশিয়ার অন্যতম অস্থিতিশীল দেশটি আগামী জুলাইয়ে সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারো সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েত পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

তবে গ্রাম অঞ্চলে থাকসিনের ব্যাপক জনসমর্থন থাকার কারণে তার ছোট বোনও এ অঞ্চলগুলোতে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন পাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। সাম্পতিক নির্বাচনী প্রচারনায় মানুষ যেভাবে সাড়া দিচ্ছে তাতে তাই বুঝা যায়।

জনসভায় ওয়াইংলাক যখন তাকে একবার সুযোগ দিতে অনুরোধ জানান তখন জনগণ সমস্বরে হ্যাঁ সূচক ধ্বনি উচ্চারণ করছে।

ওয়াইংলাক, ৪৪ বছর বয়সী এ নারী রাজনীতিতে একেবারেই নতুন। এর আগে তিনি কোনো ভাবেই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। অথচ মাত্র গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী এখন ওয়াইংলাক।

তবে তার প্রধান শক্তি হচ্ছে বর্তমানে নির্বাসনে থাকা বড় ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। অবশ্য সিনাওয়াত্রাও তাকে নিজের ‘ক্লোন’ বলে দেশবাসীর কাছে পরিচয় করে দিয়েছেন।

২০০৬ সালে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাজাকে অপমান করার অভিযোগে এক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন থাকসিন। প্রচুর ধনসম্পত্তির মালিক এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী গ্রাম অঞ্চলে গরীব মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এখনো ব্যাপক জনপ্রিয়।

কিন্তু শহুরে মধ্যবিত্ত এবং অভিজাত শ্রেণী দেশের গণতন্ত্র এবং তাদের প্রতিপত্তি হ্রাসের ব্যাপারে হুমকি মনে করায় বরাবর থাকসিনের তীব্র বিরোধীতা করে আসছে।

থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টের ৫০০ আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে এবার নির্বাচনের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হবে, থাকসিনের ‘ফিউ থাই’ এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অভিজিত ভেজ্জাজিভাসের ডেমোক্র্যাট পার্টি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী নির্বাচনে থাকসিনের দল বিজয়ী হলে সেই সরকার আরেকটি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নাকচ হয়ে যেতে পারে। আর যদি ডেমোক্র্যাটরা জয়ী হয় তাহলে থাইল্যান্ডে আবারো বিভক্তির আগুন ছড়িয়ে পড়বে।

ওয়াইংলাক জন্মগ্রহণ করেছেন ১৯৬৭ সালের ২১ জুন। ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেনটুকি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। কর্মজীবনে পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকায় এমন প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, ৬ কোটি ৬০ লাখ মানুষের দেশ থাইল্যান্ড তিনি কতোটা দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।