ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইহুদিবিদ্বেষ: হিটলারের প্রথম চিঠি!

রানা রায়হান, নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১১
ইহুদিবিদ্বেষ: হিটলারের প্রথম চিঠি!

ঢাকা: ইহুদিদের নির্মূল করার ইচ্ছা পোষণ করে লেখা জার্মানির যুদ্ধবাজনেতা অ্যাডলফ হের্ হিটলারের পুরনো একটি চিঠি পাওয়া গেছে। ১৯১৯ সালে চিঠিটি লেখার সময় হিটলারের বয়স ছিল ৩০।

  হিটলার তখন জার্মান সামরিক বাহিনীতে কর্মরত।

ধারণা করা হচ্ছে, এটিই হিটলারের লেখা প্রথম চিঠি যাতে তিনি ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্য করেন। চিঠিতে অস্ট্রিয়ায় জন্ম নেওয়া তরুণ হিটলার ইহুদি সম্প্রদায়কে নির্মূল করার আহ্বান জানিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার আভাস দিয়েছিলেন।

জার্মান সেনাবাহিনীর একটি টাইপরাইটারে চিঠিটি লেখা। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, হিটলার যে তরুণ বয়স থেকেই ইহুদিবিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করতেন, এ চিঠিই তার প্রথম অকাট্য প্রমাণ।

গত মঙ্গলবার একটি ইহুদি ঘেঁষা মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা হিটলারের স্বাক্ষর সংবলিত চিঠিটি প্রদর্শনের জন্য জনসমক্ষে এনেছেন। চিঠি হিটলার নিজ হাতে টাইপ করেছিলেন বলেও দাবি করেছে  সংগঠনটি।

লসঅ্যাঞ্জেলেসভিত্তিক ওই মানবাধিকার সংস্থা সাইমন উইনসেনথাল সেন্টারের ইহুদি ধর্মীয় নেতা (রাব্বি) মার্ভিন হিয়ার বলেন,‘হিটলার মানুষের প্রতি মানুষের নির্মম নির্যাতনকে সোনার মতো মূল্যবান মনে করতেন। ’

তিন সপ্তাহ আগে ক্যালিফোর্নিয়ার ‘প্রফাইলস ইন হিস্ট্রি’র কাছ থেকে দেড় লাখ মার্কিন ডলার দিয়ে এই চিঠি কেনে সংস্থাটি। কানসাসের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রোফাইল ইন হিস্ট্রি এটা মার্কিন সেনা উইলিয়াম এফ জিগলারের কাছ থেকে নেওয়া।

হিটলারের স্বাক্ষর সম্বলিত চার পৃষ্ঠার এই চিঠি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে জার্মানির ন্যুরেমবার্গ শহরের নাৎসি মহাফেজখানায় জিগলার পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

জার্মান ভাষায় চিঠিতে হিটলার লেখেন, ‘আমাদের জনগণের জন্য ইহুদি সম্প্রদায় আজ যে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা জনগণের বিরাট অংশের ঘৃণা প্রকাশের মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ’

চিঠির এক অংশে বলা হয়েছে, ‘একটি শক্তিশালী সরকার তথাকথিত ইহুদি হুমকি নস্যাৎ করতে সক্ষম হবে। তবে সেই সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হবে, আপোসহীনভাবে নির্বিচারে ইহুদি জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করা। ’

চিঠিটি লেখার সময় হিটলার জার্মান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সেমিটিকবিদ্বেষী উত্তেজনা ছড়াচ্ছিলেন। এসময় একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা হিটলারকে তার চিন্তাভাবনা পত্রিকায় প্রকাশের তাড়না দেন।

১৯৮৮ সালে হস্তলিখন বিশেষজ্ঞ চার্লস হ্যামিলটন চিঠিতে দেওয়া স্বাক্ষরটি যে হিটলারের সে সত্য নিশ্চিত করেন। হ্যামিলটন ‘হিটলার ডায়েরিজ’-এর জালিয়াতি ধরার কাজ করেন।

জার্মান সেনাবাহিনীর পক্ষে প্রচারণার কাজ করতেন অ্যাডলফ গেমলিখ নামের একজন সেনা কর্মকর্তা। হিটলার তার কাছেই চিঠিটি লেখেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের জন্য  কেউ না কেউ দায়ী এই ধারণা জনপ্রিয় করতে ক্যাপ্টেন উলরিখ মায়ারের পরামর্শে হিটলার এটা লেখেন।

চিঠির শেষে ‘গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে’ লিখে হিটলার তার চিঠির সমাপ্তি টানেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।